এলডিসি উত্তরণ: সময়সীমা বাড়াতে একজোট দেশের শীর্ষ ১৬ বাণিজ্য সংগঠন

দেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতের শীর্ষ ১৬টি সংগঠন প্রথমবারের মতো এক সুরে জানিয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এখনই নয়। তারা এই প্রক্রিয়াটি অন্তত তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জোরালো দাবি তুলেছে। ব্যবসায়ীদের মতে, ২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য দেশ এখনও প্রস্তুত নয়, যা অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

জাতিসংঘের নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী, আর মাত্র ১৫ মাস পরেই বাংলাদেশকে এলডিসি তালিকা থেকে বের হতে হবে। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

রবিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীতে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, টেকসই ও সফল উত্তরণের জন্য আরও সময় প্রয়োজন। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণকে সমর্থন করি। তবে সফল ও টেকসই উত্তরণের জন্য তিন থেকে পাঁচ বছরের অতিরিক্ত সময় অপরিহার্য।’

ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, এই অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও আসিয়ানের মতো বড় বাজারগুলোতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ধরে রাখতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সম্পাদন করা। পাশাপাশি, শুধু পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভর না করে ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে রপ্তানি বাড়ানো, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং মানসম্মত বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা জরুরি।

এর সঙ্গে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জনকেও তারা সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই সার্বিক প্রস্তুতির অভাবেই তারা সরকারের কাছে এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই যৌথ দাবিতে আইসিসিবি, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এমসিসিআই এবং বিসিআই-এর মতো প্রভাবশালী সংগঠনগুলোও রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমানসহ বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিরা।