ভারত ‘প্রতারণা’ করেছে; এমন উপলব্ধি থেকেই ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনে কৃতিত্ব না পেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘প্রতারিত’ মনে করছেন, যার জের ধরে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ঘটনায় নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক নতুন সংকট তৈরি হয়েছে।

কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর মার্কিন কৌশলগত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যাশলে জে. টেলিস এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনে যথাযথ কৃতিত্ব না পাওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘প্রতারিত’ বলে মনে করছেন। টেলিসের ধারণা, ট্রাম্প প্রতারিত বোধ করছেন কারণ তিনি মনে করেন ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনে তার প্রাপ্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি। তিনি আরও সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফোনকলটি উল্টো উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মিরের পহেলগামে একটি নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের সন্ত্রাসী শিবিরে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি অভিযান চালায়। এই অভিযানের ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং পঞ্চম যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
চার দিনের উত্তেজনার পর ২০২৫ সালের ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু ভারত বা পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়ার আগেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ঘোষণা দেন যে ওয়াশিংটন দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপন করেছে। এরপর থেকেই ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপন করে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়েছেন।
এই ঘটনার পর পাকিস্তান ট্রাম্প ও তার প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায় এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। তবে ভারত বরাবরই এই প্রক্রিয়ায় কোনো বিদেশি শক্তির ভূমিকার কথা অস্বীকার করে আসছে। ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফোন করলেও, যুদ্ধবিরতি স্থাপিত হয় মূলত পাকিস্তানের ডিজিএমও-র সঙ্গে ভারতীয় ডিজিএমও-র ফোনালাপের পরেই।
ভারতের অস্বীকৃতি সত্ত্বেও ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ের আশায় বারবার এই দাবি করে যাচ্ছেন। গত মাসে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ৬টি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছি এবং ভেবেছিলাম এটিই হয়তো সবচেয়ে সহজ হবে। কিন্তু এটি সহজ নয়... ভারত-পাকিস্তান, আমরা বড় জায়গা নিয়ে কথা বলছি।’
সম্প্রতি এক সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারত তার পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ মেনে নেয় না, বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে। এটিকে ‘লাল রেখা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যস্থতার দাবি করা এক বিষয়, আর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে হওয়া একটি বিষয়কে অস্বীকার করা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।’
গত আগস্টে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব না দেওয়ার কারণেই ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন এবং রুশ তেল কেনার বিষয়ে ভারতকে নিশানা করছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই কৃতিত্ব না পাওয়াটা নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পথে ট্রাম্পের জন্য একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার জেরেই তিনি চীনের বদলে ভারতের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করেছেন।
জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোয়াড সামিট ২০২৫-এ যোগ দিতে তার আসন্ন ভারত সফরও বাতিল করেছেন। এই উত্তেজনার মধ্যে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির চীন সফর ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও দূরে সরে যেতে পারে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.