সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ: নতুন নিয়মে লাভ-লোকসানের হিসাব

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার নতুন হার নির্ধারণ করেছে সরকার, যেখানে এখন থেকে বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী মুনাফার হার কম-বেশি হবে। নতুন নিয়মে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকে ‘ছোট বিনিয়োগ’ হিসেবে গণ্য করে তুলনামূলক বেশি মুনাফা দেওয়া হবে। অন্যদিকে, এর চেয়ে বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার হবে কিছুটা কম। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নতুন হার কার্যকর থাকবে।

বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছর শেষে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে। একই পরিমাণ বিনিয়োগে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার সর্বোচ্চ, ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ হারে মুনাফা মিলবে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের পরিমাণ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে মুনাফার হার কিছুটা কমে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ, ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ, ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ হবে।

মুনাফা উত্তোলনের ক্ষেত্রে উৎসে করের হারও বিনিয়োগের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৫ শতাংশ এবং এর বেশি বিনিয়োগের জন্য ১০ শতাংশ কর দিতে হবে। বিনিয়োগের আগে মুনাফার হারের পাশাপাশি করের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা জরুরি।

সঞ্চয়পত্র ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য উচ্চ মুনাফার তিনটি বিশেষ বন্ড চালু রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়, যা করমুক্ত। এছাড়া তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে সাড়ে ৭ শতাংশ এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে সাড়ে ৬ শতাংশ করমুক্ত মুনাফা দেওয়া হয়। ওয়েজ আর্নার বন্ডে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা গেলেও অন্য দুটি বন্ডে বিনিয়োগের কোনো সীমা নেই।

দীর্ঘদিন ধরেই দেশের সাধারণ মানুষের কাছে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে সঞ্চয়পত্র একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ মাধ্যম। বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ৭১টি ব্যুরো কার্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, ডাকঘর এবং নির্দিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো যায়। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির মানুষ পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন।