আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যা বলল প্রেস উইং

দেশে চুরি, ডাকাতি ও সহিংস সংঘর্ষের মতো অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও বেড়েছে হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের হার বেশি মনে হওয়ার মূল কারণ হলো পূর্ববর্তী শাসনামলে দায়ের হতে না পারা মামলাগুলো এখন নথিভুক্ত হওয়া। মঙ্গলবার পাঠানো এক তুলনামূলক প্রতিবেদনে এই চিত্র তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গত ১৩ মাসে এক হাজার ১৩০টির বেশি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে, যা আগের ১৬ বছরের শাসনামলে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলাও রয়েছে। মূলত, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের ভয়ে সে সময় ভুক্তভোগীরা মামলা করতে পারেননি এবং পুলিশও মামলা নিতে নিরুৎসাহিত ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর সেসব মামলা আলোর মুখ দেখায় আপাতদৃষ্টিতে হত্যার পরিসংখ্যান বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। চুরির মামলা ৮ হাজার ৬৫২টি থেকে কমে ৬ হাজার ৩৫৪টিতে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে, ডাকাতির ঘটনা ১ হাজার ৪০৫টি থেকে কমে ১ হাজার ৩১৪টি হয়েছে। এছাড়া, আইন ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার (দ্রুত বিচার) অপরাধ ১ হাজার ২২৬টি থেকে কমে ৬৫১টিতে এবং সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ১২৫টি থেকে কমে ৫৯টিতে নেমে এসেছে।

প্রেস উইংয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বর্তমানে থানাগুলোতে নাগরিকবান্ধব পরিবেশ তৈরি হওয়ায় মানুষ এখন ভয় বা দ্বিধা ছাড়াই অভিযোগ দায়ের করতে পারছেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সব মামলা রেকর্ড করা হচ্ছে।

তাদের মতে, ফৌজদারি জবাবদিহিতা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে এবং ভুক্তভোগীরা এখন রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের ভয় না পেয়ে অভিযোগ করতে পারছেন। সাধারণ অপরাধের নিম্নমুখী প্রবণতা উন্নত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নির্ভুলভাবে মামলা নথিভুক্ত হওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করে, যা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।