জাতিসংঘ: গাজার বেসামরিক নাগরিকরা ‘মৃত্যুদণ্ডের’ মুখোমুখি
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় চলমান ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে বেসামরিক নাগরিকরা এক ‘মৃত্যুদণ্ডের’ মুখোমুখি হয়েছেন বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির একজন জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র শুক্রবার জানিয়েছেন, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় কয়েক লাখ মানুষকে এক অসম্ভব পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

দেইর আল-বালাহ থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) মুখপাত্র ওলগা চেরেভকো বলেন, ‘এই মঙ্গলবারে এক মুহূর্তে গাজা শহরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: হয় চলে যাও, নয়তো নিহত হও।’ তিনি আরও জানান, লাখ লাখ বিপর্যস্ত, ক্লান্ত ও আতঙ্কিত বেসামরিক নাগরিককে এমন একটি এলাকায় পালিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যেই চরম জনবহুল।
গাজার ভৌগোলিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি ব্যাখ্যা করেন, পশ্চিমে সাগর এবং পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণে স্থলসেনা ও ট্যাংকগুলো ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে আকাশে ড্রোন ও যুদ্ধবিমান উড়ছে, যা বেসামরিক নাগরিকদের জন্য বেরিয়ে যাওয়ার সব পথ কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে।
ওলগা চেরেভকো জোর দিয়ে বলেন, ‘গাজার করুণা প্রয়োজন নেই। গাজার প্রয়োজন এই ভয়াবহ সহিংসতার অবসান।’ তিনি আরও বলেন, গাজার রাস্তায় এখন মৃত্যুর স্পষ্ট গন্ধ, যেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে অগণিত বেসামরিক মানুষের দেহ চাপা পড়ে আছে।
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি জানান, প্রায় চলাচলের অযোগ্য রাস্তা দিয়ে গাজায় ফেরার সময় তাদের গাড়িবহরের চারপাশে মানুষ ভিড় করেছিল এবং এই ভয়াবহতা শেষ করার জন্য আকুতি জানাচ্ছিল। তিনি বলেন, এখানকার পরিবারগুলো তাদের ‘মর্যাদা ও আশা’ হারিয়েছে, কারণ জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো ‘পরিকল্পিতভাবে ভেঙে ফেলা ও ধ্বংস করা হচ্ছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সময়, মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে আমাদের মনে হচ্ছে, আমরা চোরাবালির মধ্যে দৌড়াচ্ছি। বিশেষ করে যখন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ প্রায়শই আমাদের মানবিক সহায়তার গাড়িবহরকে প্রবেশে বাধা দেয়, বিলম্বিত করে বা আটকে রাখে।’
গাজায় চলমান দুর্ভোগের অবসানে জরুরি সিদ্ধান্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি অবিলম্বে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকার, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহির দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘গাজার মানুষ দান চাইছে না। তারা নিরাপত্তা, মর্যাদা ও শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার চাইছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের বিচার করবে আমাদের ভাষণের দ্বারা নয়, বরং আমাদের কাজের মাধ্যমে। যখন গাজা জ্বলছিল, শিশুরা অনাহারে ছিল এবং হাসপাতালগুলো ভেঙে পড়ছিল, তখন কি আমরা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম?’
হামাস বা অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে খাদ্য সহায়তা চলে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে চেরেভকো ব্যাখ্যা করেন যে, ‘সহায়তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হওয়ার ঝুঁকি সারা বিশ্বেই রয়েছে। এটি কেবল গাজার জন্য অনন্য কোনো বিষয় নয়।’
তিনি যোগ করেন, ‘এ কারণেই আমাদের অত্যন্ত কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা রয়েছে, যা নিশ্চিত করে যেন সহায়তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হওয়া প্রতিরোধ করা যায়, কমিয়ে আনা যায় এবং এমন কিছু ঘটলে তার সমাধান করা যায়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে যুদ্ধবিরতির সময় লুটপাট বা সহায়তা ভিন্ন খাতে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। কারণ তখন প্রতিদিন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের অনাহারে মৃত্যুর খবর ছিল না এবং অপুষ্টির হারও প্রতি মাসে লাফিয়ে বাড়ছিল না।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.