আরব বিশ্বের ‘বুনা’ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হচ্ছে পাকিস্তান

প্রবাসী পাকিস্তানিদের পাঠানো অর্থ আরও দ্রুত, সহজে ও নিরাপদে দেশে আনার লক্ষ্যে আরব বিশ্বের ‘বুনা’ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে নিজেদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। আরব মুদ্রা তহবিলের মালিকানাধীন এই আন্তঃসীমান্ত লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান’-এর গভর্নর জামিল আহমেদ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সৈয়দ নাভিদ কামারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অর্থ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আইনপ্রণেতাদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়। গভর্নর জামিল আহমেদ কমিটিকে জানান, এই সমন্বয়ের ফলে প্রবাসী পাকিস্তানিদের পাঠানো অর্থ আরও দ্রুত, কার্যকর ও সুরক্ষিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘বুনা’ প্ল্যাটফর্মটি শুধু বিদেশ থেকে পাকিস্তানে অর্থ প্রবেশের সুযোগ দেবে, দেশ থেকে অর্থ বাইরে পাঠানোর জন্য এটি ব্যবহার করা যাবে না।

‘বুনা’ হলো একটি বহু-মুদ্রাভিত্তিক আঞ্চলিক লেনদেন ব্যবস্থা, যা ২০২০ সালে চালু হয়। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরবি ও আন্তর্জাতিক উভয় মুদ্রায় অর্থ আদান-প্রদান করতে পারে। বর্তমানে এটি সৌদি রিয়াল ও আমিরাতি দিরহাম সমর্থন করে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য মুদ্রা যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বর্তমানে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় দেশগুলোতে প্রায় ৫৫ লাখেরও বেশি পাকিস্তানি বসবাস করেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান প্রবাসী আয় হিসেবে ৩ হাজার ৮৩০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ পেয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৯৩৪ কোটি ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৭৮৩ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্য থেকে ৫৯৯ কোটি ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৭২ কোটি ডলার।

বৈঠকে গভর্নর জামিল আহমেদ ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে পাকিস্তানকে একটি নগদবিহীন অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করার এবং দেশের ৭৫ শতাংশ তরুণকে ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে বর্তমানে ৯ কোটি ৫০ লাখ সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারকারী, ২২ কোটি ৬০ লাখ ব্যাংক হিসাব এবং ৮ লাখ ৫০ হাজার কিউআর মার্চেন্ট রয়েছে।