আপনি পড়ছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ছয় বছরেরও বেশি সময় পর যুক্তরাষ্ট্রের সরকার প্রথমবারের মতো ‘শাটডাউন’ বা অচলাবস্থার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। মধ্যরাতের মধ্যে বাজেট তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে আলোচনায় কোনো সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।

শাটডাউনের পথে যুক্তরাষ্ট্র, প্রতীকী ছবি

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সম্ভবত একটি সরকারি শাটডাউনের মুখোমুখি হব। কিছুই অনিবার্য নয়, কিন্তু আমি বলব এটি সম্ভবত ঘটবে।’

বছরের শুরু থেকেই ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে বাজেট ও ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে তীব্র মতবিরোধ চলছিল। সোমবার হোয়াইট হাউসে এ নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক হলেও কোনো পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। বৈঠকের পর সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে।’

এদিকে, এই অচলাবস্থার মধ্যে বিষয়টি এখন ব্যক্তিগত আক্রমণে গড়িয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফরিজ অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি ‘বর্ণবাদী ও মিথ্যা’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্মিত ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাকে এবং চাক শুমারকে বিদ্রূপ করা হয়েছে। ভিডিওটিতে জেফরিজকে মেক্সিকান সোমব্রেরো টুপি ও গোঁফ পরা অবস্থায় দেখানোর পাশাপাশি পটভূমিতে অবমাননাকর সঙ্গীত ব্যবহার করা হয় এবং দাবি করা হয়, ডেমোক্র্যাটরা অবৈধ অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধার ঘোষণা দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেফরিজ বলেন, ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট, যদি আমার সম্পর্কে কিছু বলার থাকে, তাহলে এ ধরনের বর্ণবাদী ও মিথ্যা ভিডিওর মাধ্যমে নয়, বরং ওভাল অফিসে আমার মুখোমুখি হয়ে বলুন।’

অন্যদিকে, ট্রাম্প পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, ডেমোক্র্যাটদের কারণেই আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না এবং সরকার বন্ধ হলে এর দায় তাদেরই নিতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা শাটডাউনের সময় এমন কিছু করতে পারি, যা তাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হবে।’

উল্লেখ্য, বছরের শুরুতে ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’ কর্তৃক ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। নতুন করে শাটডাউনের ফলে আবারও বিপুল সংখ্যক সরকারি কর্মী বেকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।

কংগ্রেসের উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা বাজেটের মেয়াদ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির জন্য আরও সময় পাওয়া যায়। অন্যদিকে, সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাটরা দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা খাতে শত শত বিলিয়ন ডলারের বাজেট ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যা ট্রাম্প প্রশাসন বাতিল করতে চায়।

প্রতিনিধি পরিষদ ইতোমধ্যে সাত সপ্তাহের একটি তদারকি বাজেট পাস করলেও বিলটি সিনেটে আটকে আছে। ১০০ সদস্যের সিনেটে বাজেট পাস করতে ৬০ ভোটের প্রয়োজন, যেখানে রিপাবলিকানদের আসন সংখ্যা ৫৩। সমঝোতার কোনো লক্ষণ না থাকায় স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের জন্য কংগ্রেসে ভোটাভুটি হতে পারে, যদিও তাতে সাফল্যের আশা কম।

এরই মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন তার চেম্বারের সদস্যদের সপ্তাহজুড়ে ওয়াশিংটনে না ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হাকিম জেফরিজ বলেন, ‘যখন সরকার বন্ধ হওয়ার পথে, তখন তারা ছুটিতে!’

যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউন অত্যন্ত অজনপ্রিয় এবং এর ফলে অপ্রয়োজনীয় সরকারি সেবাগুলো বন্ধ হয়ে যায়, লাখো কর্মী বেতন ছাড়াই ছুটিতে যেতে বাধ্য হন এবং বিভিন্ন সামাজিক সেবার অর্থপ্রদান ব্যাহত হয়। এর আগে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেই দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ ৩৫ দিনের শাটডাউন হয়েছিল।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.