বিশ্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি কয়লাকে ছাড়িয়ে গেলো

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিশ্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি (রিনিউএবল এনার্জি) কয়লাকে ছাড়িয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি খাতে এটি একটি ‘ঐতিহাসিক পরিবর্তন’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্বের জ্বালানি গবেষণা সংস্থা এমবার ৮৮টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেসব দেশ মিলে বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৯৩ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

এমবারের সিনিয়র বিদ্যুৎ বিশ্লেষক মাওগরজাতা উইয়াত্রোস-মোটিকা বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক মোড় ঘুরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেখছি। সৌর ও বায়ু শক্তির বৃদ্ধি এখন এতটাই দ্রুত যে তা বিশ্বের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারছে। পরিষ্কার জ্বালানির যুগে প্রবেশের এটাই সূচনা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানির এই উত্থান মূলত চীন ও ভারতের প্রবল অগ্রগতির ফল। এই দুই দেশেই সৌর ও বায়ু শক্তির উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় কয়লা ও গ্যাসের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পরিস্থিতি ছিল কিছুটা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে ফসিল জ্বালানির ব্যবহার আবারও বেড়েছে।

ইইউতে দুর্বল বায়ুপ্রবাহ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি নবায়নযোগ্য শক্তির প্রবৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানায় এমবার।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আসন্ন বছরগুলোতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রবৃদ্ধি জোরদার থাকবে।
সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি আসবে সৌর শক্তি থেকে, কারণ এর খরচ তুলনামূলক কম এবং প্রকল্প অনুমোদনও দ্রুত হয়।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে বায়ু শক্তি, এরপর জলবিদ্যুৎ, বায়োএনার্জি ও ভূতাপ শক্তি।

এমবার জানায়, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার উদীয়মান বাজারগুলো নবায়নযোগ্য খাতে দ্রুত অগ্রগতি করছে। বিভিন্ন দেশ এখন সবুজ শক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংস্কার ও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করছে।

বিশেষ করে চীন, যারা ২০২৪ সালে এককভাবে প্রায় ৬২৫ বিলিয়ন ডলার (৫৩৫ বিলিয়ন ইউরো) বিনিয়োগ করেছে নবায়নযোগ্য শক্তিতে, বিশ্বের সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী হিসেবে।