সুপার ওভারে নাটকীয় হার বাংলাদেশের

ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সুপার ওভার খেলতে নেমেই হারের তিক্ত স্বাদ পেল বাংলাদেশ। মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচে ১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ রানেই থেমে যায় সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানের দৌড়। ফলে নাটকীয় এক লড়াইয়ে জয় তুলে নেয় সফরকারীরা।

সুপার ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার আকিল হোসেন বোলিংয়ে এসে প্রথম বলটিই ওয়াইড দেন। পরের বলটি ‘নো’ হওয়ায় কোনো বৈধ বল খেলার আগেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় ৪ রান। জয়ের সমীকরণ নেমে আসে ৬ বলে ৬ রানে। এমন সহজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম বৈধ বলে সৌম্য এক রান নেন। পরের বল ডট হলেও তৃতীয় বলে সাইফ এক রান নেন। কিন্তু চতুর্থ বলে আউট হয়ে যান সৌম্য। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রানের, কিন্তু সাইফ নিতে পারেন মাত্র এক রান।

এর আগে, বাংলাদেশের হয়ে সুপার ওভারে বল করেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম পাঁচ বলে ৬ রান দিলেও শেষ বলে বাউন্ডারি হজম করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেটে ১০ রান।

মূল ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্বে দলটি ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রান আসে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। তবে টপ অর্ডারের অন্য ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হন। সাইফ হাসান (৬), তাওহিদ হৃদয় (১২), নাজমুল হোসেন শান্ত (১৫) ও অঙ্কন (১৭) বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।

১০৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখন নুরুল হাসান সোহান ২৩ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তবে শেষদিকে রিশাদ হোসেনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। মাত্র ১৪ বলে ৩৯ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। অধিনায়ক মিরাজ ৫৮ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন।

২১৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। অধিনায়ক মিরাজ শুরু থেকেই দুই প্রান্তে স্পিন আক্রমণ চালান। নাসুম আহমেদ ইনিংসের তৃতীয় বলেই ব্রেন্ডন কিংকে ফিরিয়ে দেন। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন আলিক আথানজে ও কেসি কার্টিকে ফিরিয়ে দিয়ে সফরকারীদের চাপে ফেলেন। একটা পর্যায়ে ১৩৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ক্যারিবীয়রা।

তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে অনবদ্য ব্যাটিং করেন শাই হোপ। জাস্টিন গ্রেভসের (২৬) সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি এবং পরে আকিল হোসেনকে (১৬) নিয়ে দলকে লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রানেই থেমে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস, এবং ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। হোপ ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন।