গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর প্রতি ফ্রান্সের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

গাজায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অবদান রাখার পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স। দেশটি জানিয়েছে, এই বাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনরায় মোতায়েনে সহায়তা করবে এবং এ লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব আনারও পরিকল্পনা রয়েছে।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র প্যাসকেল কনফ্যাভরিউ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু রাষ্ট্র এই স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অবদান রাখতে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। এই বাহিনী ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে সমর্থন করবে, যাদের গাজা উপত্যকায় পুনরায় মোতায়েনের জন্য আমরাও সহায়তা করছি।’

কনফ্যাভরিউ উল্লেখ করেন যে ফ্রান্স তার ব্রিটিশ ও মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আগামী দিনগুলোতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করতে চায়। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটি একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক আইনি ভিত্তি দেবে এবং অন্যান্য দেশকেও এই আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগদানে সক্ষম করবে। একারণেই আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন যে স্থিতিশীলতা বাহিনীটি তিনটি মূল উপাদানের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার প্রথমটি হলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাজায় ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যাবর্তন। কনফ্যাভরিউ বলেন, ‘আমাদের নির্ধারণ করতে হবে, আমরা এমন একটি অনুমোদন কতটা নিশ্চিত করতে পারি যা এর কাঠামো, কার্যপ্রণালী এবং প্রয়োজনীয় অবদানগুলোকে সংজ্ঞায়িত করবে। সবকিছু ধাপে ধাপে স্থাপন করতে হবে।’

ফরাসি মুখপাত্র পুনরায় নিশ্চিত করেন যে বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন পাওয়ার দিকেই মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই অনুমোদন স্থিতিশীলতা বাহিনীর কাঠামো ও কার্যপ্রণালী নির্ধারণ করবে, যার পরে বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছ থেকে অবদান নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এই বাহিনীর বিষয়ে আমি মনে করি, সরঞ্জাম ও অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনা হবে। ফ্রান্সের অবদান কী হবে, তা বলার সময় এখনও আসেনি। সম্ভাব্য সৈন্য মোতায়েনের বিষয়ে এই মুহূর্তে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’

কনফ্যাভরিউ জানান, ফ্রান্স ও মিশরের সমন্বয়ে একটি মানবিক সম্মেলন ‘সম্ভবত নভেম্বরের শেষে’ অনুষ্ঠিত হবে। এর দুটি অংশ থাকবে: একটি অর্থায়ন সুরক্ষিত করতে তহবিল সংগ্রহের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে এবং অন্যটি গাজা উপত্যকার পুনর্গঠন নিয়ে কাজ করবে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও লেবাননে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকারী সব হামলাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানাই।’ তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে করা প্রতিশ্রুতি ‘সম্পূর্ণরূপে সম্মান’ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কনফ্যাভরিউ আরও বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে বিশেষ করে দক্ষিণ লেবাননের সেই পাঁচটি অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনও উপস্থিত রয়েছে।’