আপনি পড়ছেন

পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্ত করা হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘সমস্ত সমর্থন’ হারানোর বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই কঠোর সতর্কবার্তা ইসরায়েলের ডানপন্থী দলগুলোর দীর্ঘদিনের স্বপ্নকে কার্যত ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

বৃহস্পতিবার টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারটি গত ১৫ অক্টোবর নেওয়া হয়েছিল। এরপরেই বুধবার ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরের বসতিগুলোতে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার একটি বিল প্রাথমিক অনুমোদন পায়। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের অসন্তুষ্টি আরও স্পষ্ট হয়, যখন বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফর শেষে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স নেসেটের এই ভোটকে ‘খুবই নির্বোধের মতো কাজ’ এবং ব্যক্তিগতভাবে ‘অপমানজনক’ বলে অভিহিত করেন।

ভূখণ্ড সংযুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘এটি ঘটবে না। এটি ঘটবে না কারণ আমি আরব দেশগুলোকে কথা দিয়েছি। এখন আপনারা এটা করতে পারেন না। আমরা আরব দেশগুলোর দারুণ সমর্থন পেয়েছি। আমি যেহেতু কথা দিয়েছি, তাই এটি ঘটবে না। যদি এমনটা ঘটে, তবে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তার সমস্ত সমর্থন হারাবে।’

এর আগেও গত মাসে ট্রাম্প এই পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তার মন্তব্যটি ছিল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও দাবি করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করেছেন, অন্যথায় এই যুদ্ধ ‘বছরের পর বছর’ চলতে পারত। তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, এই বছরের শেষ নাগাদ ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে।

নেসেটে ‘অদ্ভুত’ ভোট

বুধবার নেসেটে দুটি বিল পাস হয়। একটিতে পশ্চিম তীরের সমস্ত বসতি এবং অন্যটিতে মালে আদুমিন শহরকে সংযুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। বিল দুটি ডানপন্থী বিরোধীদলীয় সদস্যরা উত্থাপন করেন, যদিও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার লিকুদ পার্টির বেশিরভাগ সদস্য এর বিরোধিতা করেন। নেতানিয়াহুর জোটের কট্টর ডানপন্থী শরিকদের সমর্থনে এবং লিকুদ পার্টির বেশিরভাগ সদস্য ভোটদানে বিরত থাকায় বিল দুটি পাস হয়।

বিলগুলো এখন কমিটিতে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আইন হিসেবে পাস হতে আরও তিনটি ভোটের প্রয়োজন হবে। তবে ট্রাম্পের সুস্পষ্ট ভেটোর কারণে এর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

বৃহস্পতিবার বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ইসরায়েল ছাড়ার আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স নেসেটের এই ভোটকে ‘অদ্ভুত’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এই রাজনৈতিক চমকটি খুবই নির্বোধের মতো এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এটিকে অপমান হিসেবে দেখছি। পশ্চিম তীর ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হবে না। এটাই আমাদের নীতি থাকবে।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার রাতে জানান, নেসেটের এই পদক্ষেপ গাজায় ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তোলপাড়

ভ্যান্সের সমালোচনার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ভ্যান্সের সফরের সময় বিভেদ সৃষ্টির জন্য বিরোধীদের এটি একটি ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক উস্কানি ছিল।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, লিকুদ পার্টির সমর্থন ছাড়া এই বিলগুলোর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।

অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার এই ভোটকে ‘সরকারকে বিব্রত করার জন্য বিরোধীদের একটি রাজনৈতিক চাল’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিষয়টি নেতানিয়াহুর জন্য বেশ জটিল, কারণ তার কট্টর ডানপন্থী সমর্থকরা ভূখণ্ড সংযুক্তির পক্ষে। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ, বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজসহ মন্ত্রিসভার অনেক জ্যেষ্ঠ সদস্যই এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

গাজা যুদ্ধবিরতি ও ভবিষ্যৎ

গাজার যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে।’ তিনি জানান, কিছু ছোটখাটো ব্যতিক্রম ঘটলেও শান্তি বজায় রয়েছে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, গাজায় ‘হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য’ একটি নতুন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী নেতৃত্ব দেবে। এই বাহিনীর গঠন এবং কার্যকারিতার ওপর শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন নির্ভর করবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.