পশ্চিম তীরে ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চাইলেন ইসরায়েলি এমপি
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের একজন সংসদ সদস্য (এমপি) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অধিকৃত পশ্চিম তীরে গণহত্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি এই ধরনের বিপর্যয় ঠেকাতে বিশ্বকে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ওফার ক্যাসিফ নামের এই এমপি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে বড় ধরনের নৃশংসতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাসিফ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে তারা অনেক দেরি করেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, পশ্চিম তীরেও একই ধরনের পরিস্থিতি ঘটার জন্য অপেক্ষা করা উচিত হবে না, কারণ ইসরায়েল সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখনই যুক্ত হোন। এই দুটি বিপদ বন্ধ করতে সম্ভাব্য সবকিছু করুন, কারণ এটি ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি উভয়ের জন্যই হুমকিস্বরূপ এবং শেষ পর্যন্ত পুরো অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক।’
ট্রাম্পের ভাষণের সময় নেসেট থেকে বহিষ্কার
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেসেটে দেওয়া ভাষণের সময় তাকে এবং আরেক এমপি আয়মান ওদেহকে বহিষ্কার করার ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যাসিফ জানান, তারা ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এটি আসলে কোনো ভাষণ ছিল না। এটি ছিল কিছু বিচ্ছিন্ন শব্দের সংগ্রহ। এটি ছিল তিনজন আত্মমগ্ন অহংকারসর্বস্ব ব্যক্তির একটি নাটক, বিশেষ করে (ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন) নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্প, এবং কিছুটা নেসেটের স্পিকার আমির ওহানারও।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল নির্লজ্জ তোষামোদের এক প্রদর্শনী, যা সত্যিই বিরক্তিকর।’
ক্যাসিফ বলেন, তাদের বার্তাটি ছিল ভবিষ্যতের জন্য। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং দখলদারিত্বের অবসানই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে ট্রাম্প নিজেও ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবন বিসর্জন এবং ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
‘সরকার ফ্যাসিবাদী অভ্যুত্থান সম্পূর্ণ করতে চায়’
সোমবার শুরু হওয়া নেসেটের শীতকালীন অধিবেশন সম্পর্কে ক্যাসিফ বলেন, সরকার আগামী মাসগুলোতে দুটি প্রধান লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। প্রথমত, তারা অভ্যুত্থান চালিয়ে যেতে চায়, যাকে তারা ‘বিচার বিভাগীয় সংস্কার’ বলে অভিহিত করছে। তিনি এটিকে একটি পরিপূর্ণ ফ্যাসিবাদী অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেন, যার লক্ষ্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুরোপুরি নির্মূল করা।
দ্বিতীয়ত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা এবং সবশেষে, অবশিষ্ট নাগরিক অধিকারগুলোও কেড়ে নেওয়া। তিনি বলেন, ‘এই সরকার ইসরায়েলের গণতন্ত্রের প্রতিটি অবশিষ্ট উপাদানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’
ক্যাসিফ জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি এবং জলপাই সংগ্রহকারী কর্মীদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ মাত্রার সহিংসতা দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘দখলদার বাহিনী তাদের জমি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসী বসতি স্থাপনকারীদের জন্য পথ তৈরি করতে। এটি সরকারের নীতিরই অংশ এবং গভীর উদ্বেগের আরেকটি কারণ।’
বিরোধী দলের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ
ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিরোধী দল সম্পর্কে ক্যাসিফ বলেন, এখানে কেবল নামমাত্র বিরোধী দল আছে, সত্যিকারের কোনো বিরোধী দল নেই। কারণ বিরোধী দলের বেশিরভাগ সদস্যই সরকার ও জোটের সঙ্গে একমত। তারা কোনো রাজনৈতিক বিকল্প প্রস্তাব করে না, কেবল ব্যক্তিগত বিকল্প দেয়। তার মতে, ইসরায়েলে এখন তথাকথিত বিরোধী দল এবং জোটের মধ্যে লড়াই চলছে পরবর্তী নেতানিয়াহু কে হবেন তা নিয়ে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু শতভাগ নেতিবাচক। এটি ইসরায়েলি সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং ইসরায়েলকে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় পরিণত করেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে তিনি ইতিবাচক ফলাফলের আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দখলদারিত্বের অবসান ঘটবে এবং একটি সত্যিকারের স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
আসন্ন নির্বাচন ও নেতানিয়াহুর সম্ভাবনা নিয়ে ক্যাসিফ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আর যদি নির্বাচন হয়ও, তবে তা সুষ্ঠু হবে না। তিনি বলেন, ‘আমি আশঙ্কা করছি, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন বা এমনকি তারা হেরে গেলে নির্বাচনের পরেও আমরা সহিংসতা দেখতে পাব।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.