সীমান্ত সংঘাতের অবসান, শান্তি চুক্তিতে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড

দীর্ঘদিনের সীমান্ত সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড। এই চুক্তির ফলে জুলাই মাসে হওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সৃষ্ট উত্তেজনার অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। রোববার কুয়ালালামপুরে আসিয়ানের ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুথিন চার্নভিরাকুল উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘উভয় দেশ সব ধরনের শত্রুতা বন্ধ করতে এবং ভালো প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তির আওতায় মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান দেশগুলোর পর্যবেক্ষকদের মোতায়েন করা হবে, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত ও টেকসই হয়।’

জুলাই মাসে দুই দেশের সীমান্ত বিরোধ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। পরবর্তীতে ট্রাম্প ও আনোয়ারের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং উভয় পক্ষ উত্তেজনা কমাতে কাজ করে আসছে। ট্রাম্প যোগ করেন, ‘আমরা উভয় দেশের সঙ্গেই অনেক ব্যবসা করি। আমাদের সেই ব্যবসাকে কাজে লাগিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যেন তারা যুদ্ধে না জড়ায়, তবে আমি মনে করি এই শান্তি অনেক দীর্ঘস্থায়ী হবে।’

এই চুক্তির আওতায় কম্বোডিয়ার ১৮ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত তার দেশের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য তার নাম প্রস্তাব করার কথা বলেন। এর আগে আগস্ট মাসেও কম্বোডিয়া ট্রাম্পকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল। তিনি যুদ্ধবিরতিতে সমর্থন দেওয়ার জন্য চীনসহ অন্যান্য দেশকেও সাধুবাদ জানান। মানেত বলেন, কম্বোডিয়া এই শান্তি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং থাইল্যান্ডসহ সব অংশীদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে। তিনি আরও জানান, উভয় দেশের কমান্ডাররা প্রথম ধাপে আংশিক সৈন্য প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী চার্নভিরাকুল উপস্থিত নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এই ঘোষণা সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে মতপার্থক্য সমাধানের ইচ্ছারই প্রতিফলন’। তিনি আরও জানান, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আস্থা তৈরি করতে উভয় পক্ষই সীমান্ত এলাকা থেকে ভারী অস্ত্র অপসারণের কাজ দ্রুত শুরু করবে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সব পক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং এই শান্তি চুক্তিকে সমর্থন করার জন্য ট্রাম্পের ‘উদ্বেগ, সহানুভূতি এবং প্রতিশ্রুতির’ প্রশংসা করেন।

এদিকে, ট্রাম্প আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়েও কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি খুব দ্রুত এর সমাধান করে ফেলব’। তিনি আরও বলেন যে তিনি উভয় পক্ষকেই চেনেন এবং দ্রুত একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে বলে তার কোনো সন্দেহ নেই।