ধেয়ে আসছে ‘মন্থা’, সাগরে বাড়ছে চাপ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে চলেছে, যা থাইল্যান্ডের দেওয়া ‘মন্থা’ নামে পরিচিত হবে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ২৮ অক্টোবর নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রোববার ভারতের আবহাওয়া সংস্থার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গভীর নিম্নচাপটি পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৬১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং চেন্নাই থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এর গতিপথ বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং মছলিপত্তনম-কাকিনাদাতে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে থাকা নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসার দেওয়া এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, রোববার সকালে গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এর কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর উত্তাল থাকায় দেশের চারটি সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি আরব সাগরেও একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী কয়েকদিনে আরও শক্তিশালী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘মন্থা’ থাইল্যান্ডের দেওয়া একটি শব্দ, যার অর্থ ‘সুন্দর ফুল’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৩টি দেশের একটি প্যানেল পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে। এই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।