গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনীতে কারা থাকবে, সিদ্ধান্ত নেবে ইসরায়েল

গাজায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কোন কোন দেশের সেনা থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিজেদের হাতেই রাখবে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে তাদের হাতে এবং এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই বাহিনী গঠনের বিষয়ে আরবসহ অন্যান্য দেশগুলো সেনা পাঠাতে রাজি হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজে গাজায় কোনো সেনা পাঠাবে না। তবে ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, কাতার, তুরস্ক ও আজারবাইজানের মতো দেশগুলোকে নিয়ে একটি বহুজাতিক বাহিনী গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণের যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা তারা প্রত্যাখ্যান করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

গত ২৬ অক্টোবর, রবিবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে। আন্তর্জাতিক বাহিনীর ক্ষেত্রেও আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি—কোন বাহিনী আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য আর কোনটি নয়, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেব। এভাবেই আমরা কাজ করি এবং ভবিষ্যতেও করব।’

বৈঠকের শুরুতে তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে না। আমরা অংশীদার, নিয়ন্ত্রিত নই।’ তবে পরে তিনি এও জানান যে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের এই অবস্থানকে সমর্থন করে এবং মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারাও সম্প্রতি বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

এর আগে গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, গাজায় তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো ভূমিকা তিনি দেখতে চান না। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের শুরু থেকেই তুরস্কের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইসরায়েলের এই অভিযানকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়ে এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সম্প্রতি ইসরায়েল সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাহিনীতে এমন দেশের সেনাদেরই থাকা উচিত, যাদের সঙ্গে ইসরায়েল স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।’ তবে তিনি তুরস্কের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। রুবিও আরও জানান, গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকতে পারবে না।

এদিকে, ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় এখনো নিহত ১৩ জন জিম্মির দেহাবশেষ রয়ে গেছে এবং হামাস তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানে। অন্যদিকে, মিশরীয় একটি কারিগরি দলকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। এই দলটি ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা দেহাবশেষ অনুসন্ধানে খননযন্ত্র ও ট্রাক ব্যবহার করবে।