ফিলিস্তিন ফুটবল সংস্থার আইন উপদেষ্টা ক্যাট ভিলারেভ বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিলেও ফিফা ও উয়েফা তা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করছে। তার অভিযোগ, সংস্থা দুটি ইসরায়েলকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।

ইসরায়েলের পতাকা

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রীড়া আইন বিশেষজ্ঞ ভিলারেভ জানান, জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ফেয়ারস্কোয়ারের মতো প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ হাজির করেছে। কিন্তু ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং উয়েফা সভাপতি আলেকজান্ডার সেফেরিন সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করছেন।

তিনি বলেন, ‘ফুটবল এবং বাস্কেটবল উভয় সংস্থাই অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূমিকে নিজেদের প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করছে। এর অর্থ হলো, তারা সরাসরি দখলদারিত্ব এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকে সহায়তা করছে। ইসরায়েলি ক্রীড়াঙ্গনের সব স্তরের জড়িত থাকার বিষয়টি বিবেচনা করে বিশ্ব ক্রীড়া সংস্থাগুলোর উচিত তাদের নিজস্ব আইন, মানবাধিকার নীতি এবং শাস্তিমূলক বিধিমালা প্রয়োগ করা।’

ভিলারেভ আরও বলেন, ইসরায়েলি ক্রীড়াবিদরা একইসঙ্গে সৈনিক এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ গাজা ধ্বংসেরও আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ক্লাব এবং সংস্থা প্রকাশ্যে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীকে সমর্থন করেছে।

দ্বৈতনীতি

ভিলারেভ উল্লেখ করেন, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য ফিফা এবং উয়েফা খুব দ্রুত রাশিয়া ও বেলারুশকে প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করেছিল। কিন্তু ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার বাইরে রাখতে সংস্থা দুটি তাদের নিজেদের আইনি নীতিগুলোই লঙ্ঘন করছে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এ ধরনের বিষয়ে ফিফা বা উয়েফার ওপর কোনো বাহ্যিক নজরদারি ব্যবস্থা নেই, তাই তারা নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারে। তাদের নিয়ম অনুযায়ী, ক্রীড়া পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক বিবেচনার কোনো স্থান থাকা উচিত নয়। অথচ বিষয়টি এখন অতিমাত্রায় রাজনৈতিক হয়ে উঠেছে এবং এখানে শক্তিশালী পক্ষের স্বার্থই প্রাধান্য পাচ্ছে। এটি ক্রীড়াঙ্গনের ভেতরের বৈষম্যেরই প্রতিফলন।’

ভিলারেভ যোগ করেন, গাজার ক্রীড়াবিদদের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত (সিএএস) বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) আপিল করার কোনো অধিকার নেই। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি সংস্থাগুলো (যেমন ফিফা) সরাসরি সেখানে বিচারের মুখোমুখি হতে পারে না। তবে ওই সংস্থাগুলোর ভেতরের ব্যক্তিরা, যেমন জনাব ইনফান্তিনো এবং জনাব সেফেরিন, ব্যক্তিগতভাবে আইসিসির আওতাধীন অপরাধে সহায়তা করলে তাদের বিচার হতে পারে।’

‘বসতি স্থাপনকারী ক্লাবগুলো যুদ্ধাপরাধের শামিল’

ভিলারেভের মতে, অধিকৃত এলাকায় বসতি স্থাপনকারী বেসামরিক নাগরিকদের অবৈধভাবে স্থানান্তর একটি যুদ্ধাপরাধ, যারা একই সঙ্গে উপনিবেশের ক্লাবগুলোর ক্রীড়াবিদও। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে তাদের চুরি করা জমিতে বসতি এবং ফুটবল ক্লাব নির্মাণ করা আরেকটি যুদ্ধাপরাধ। কোনো ইচ্ছুক রাষ্ট্র ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়বদ্ধতার নীতির অধীনে ফিফা এবং উয়েফার সভাপতিদের এই যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে সহায়তার জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে।’

আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আইনে নতুন নিয়ম বা ব্যবস্থা চালু করার ওপর জোর দিয়ে ভিলারেভ বলেন, ‘এর প্রয়োজন সবসময়ই ছিল এবং রাশিয়া ও ইসরায়েলের প্রতি ভিন্ন ভিন্ন আচরণের মাধ্যমে সেই প্রয়োজন এখন আরও প্রকট হয়েছে।’ তার মতে, পুরো ব্যবস্থাটি ইনফান্তিনো এবং সেফেরিনের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যারা নীতির পরিবর্তে রাজনীতি ও ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন। ভিলারেভ মনে করেন, এই অন্যায় ও ভণ্ডামিকে সম্মিলিতভাবে প্রত্যাখ্যান করা উচিত এবং ইসরায়েল অংশ নেয় এমন যেকোনো প্রতিযোগিতা বর্জন করা উচিত।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.