সুদানের আল-ফাশিরে তীব্র সংঘাত, পালাচ্ছে হাজারো বেসামরিক নাগরিক

সুদানের আল-ফাশির শহরে তীব্র সহিংসতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এক হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সোমবার সুদানের একটি নাগরিক সমাজ সংস্থা জানিয়েছে, নতুন করে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এই ব্যক্তিরা উত্তর দারফুর প্রদেশের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।

দারফুরের পাঁচটি প্রদেশের জন্য মানবিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত আল-ফাশির শহরে রবিবার সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে তীব্র লড়াই অব্যাহত ছিল।

‘ডিসপ্লেসড পারসন্স কো-অর্ডিনেশন’ নামে একটি স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, রবিবার আল-ফাশির থেকে পালিয়ে ৩৬০টি পরিবারের মোট ১,১১৭ জন তাউইলায় পৌঁছেছেন। একই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর ফলে গত ১৮ থেকে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে তাউইলায় আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারের সংখ্যা ৮৩১-এ দাঁড়িয়েছে, যার মোট সদস্য সংখ্যা ৩,০৩৮ জন।

বাস্তুচ্যুতদের জন্য সাধারণ সমন্বয় পরিষদের মুখপাত্র অ্যাডাম রিগাল আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, এই পরিবারগুলো অত্যন্ত শোচনীয় মানবিক পরিস্থিতিতে বসবাস করছে এবং তাদের বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রেরও অভাব রয়েছে। রিগাল বলেন, ‘এই পরিবারগুলোর জন্য জরুরিভাবে জীবন রক্ষাকারী পরিষেবা প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে পানি, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খাদ্য, আশ্রয়, সুরক্ষা, শিক্ষা এবং মানসিক সহায়তা।’ তিনি জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানান।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের চারটি সংস্থা—আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)—জানিয়েছিল যে আল-ফাশিরে ২ লাখ ৬০ হাজার বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার শিশু তীব্র খাদ্য সংকট ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে ভুগছে।

কৌশলগত গুরুত্বের কারণে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ পাঁচ দিক থেকে আক্রমণ চালানোর পর থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে আল-ফাশিরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। আরএসএফ ২০২৪ সালের ১০ মে থেকে আল-ফাশির অবরোধ করে রেখেছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে চলমান এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।