প্রেস সচিব: একবিংশ শতাব্দীতে হাসিনার চেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কেউ নেই

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার যারা নিচ্ছেন, তাদের তার আগের কর্মকাণ্ড ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীতে শেখ হাসিনার চেয়ে বড় খুনি বা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী আর কেউ নেই।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, যারা তার (শেখ হাসিনার) ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তারা যেন তার অতীতের কর্মকাণ্ড ভুলে না যান। শেখ হাসিনার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি জাতিসংঘের রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এ ছাড়া আরও দুটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তিনি খুনের নির্দেশ দিচ্ছেন।

রয়টার্স, দ্য ইনডিপেনডেন্ট ও এএফপি এর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার গ্রহণের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলতে পারবেন। আমরা এখনো সাক্ষাৎকারটি পড়িনি। পড়ার পর মন্তব্য করব।

তবে তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে শেখ হাসিনার চেয়ে বড় হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন কেউ করেনি, এটা আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে তা বৈধ হবে না। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, আমরা এটা দেখি নাই। বাট আওয়ামী লীগ তো নাই। আমরা তো কোথাও আওয়ামী লীগকে দেখি নাই। দু-একটা ঝটিকা মিছিল হয়, হয়তো কেউ কেউ এর জন্য দু-একটা ডলার পান এই তো।

প্রেস সচিব বলেন, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ দেশের টাকা চুরি করে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দামি ল ফার্মকে হায়ার করেছে, যেখানে তারা একপক্ষীয় তথ্য দিয়ে নিজেদের ক্লেইম তৈরি করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে দেশের ভেতর থেকেও কিছু মানুষ এই প্রোপাগান্ডা প্রমোট করছে।

তিনি আরও বলেন, একটি লোকাল নিউজ মিডিয়াতে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে ক্লেইম দেওয়া হয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনার ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো উল্লেখই নেই। আবার তারা বলছে, চার শতাধিক লোক মারা গেছে, এটাও আনকনটেস্টেডভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।

আজকের ব্রিফিং এমন সময়ে এলো, যখন যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি প্রবাসে থাকা শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। এতে তিনি বলেছেন, ‘আমি বা আমার পরিবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে না থাকলেও সমস্যা নেই।

তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও সহিংসতার দায়ে বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে, এবং তার বক্তব্য নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে তা মোকাবিলায় সরকার সতর্ক থাকবে।