আপনি পড়ছেন

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে তাপজনিত মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। স্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সর্বশেষ ল্যানসেট কাউন্টডাউন প্রতিবেদন অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকের তুলনায় এই মৃত্যুর হার ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বছরে আনুমানিক ৫ লাখ ৪৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট নজিরবিহীন স্বাস্থ্যঝুঁকির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রেকর্ড করা ৮৪ শতাংশ প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহের দিনের জন্যই জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী। এতে বলা হয়েছে, শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তীব্র তাপের কারণে বিশ্বব্যাপী কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরিমাণও রেকর্ড ছুঁয়েছে, যা প্রায় ৬৩ হাজার ৯০০ কোটি ঘণ্টায় পৌঁছেছে। এই সংখ্যা নব্বইয়ের দশকের গড় থেকে প্রায় ৯৮ শতাংশ বেশি। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে আনুমানিক ১.০৯ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যা বৈশ্বিক মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১ শতাংশ।

এ বছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যঝুঁকি নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে’। এতে আরও যোগ করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ‘গ্রহের সেই ব্যবস্থা এবং পরিবেশগত অবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলছে, যার ওপর মানুষের জীবন নির্ভরশীল’।

তাপজনিত মৃত্যু ছাড়াও প্রতিবেদনে অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছর দাবানলের ধোঁয়ার কারণে রেকর্ড ১ লাখ ৫৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, ১৯৫০-এর দশকের পর থেকে মশা দ্বারা বাহিত ভাইরাসজনিত রোগ ডেঙ্গুর বৈশ্বিক সংক্রমণ সম্ভাবনা ৪৯ শতাংশ বেড়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট বায়ুদূষণে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় বলেও প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণ ১.৬ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং বিশ্বব্যাপী বৃক্ষ নিধন ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ কোটি ৮০ লাখ হেক্টরের বেশি হয়েছে। ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রেকর্ড করা হয়, এবং গত দশক ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম দশক।

ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনের ঠিক আগে স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সাময়িকীর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো। এতে কার্বনমুক্ত জ্বালানিতে আরও বেশি বিনিয়োগ, জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ এবং স্বাস্থ্যগত প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত পরিকল্পনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনের লেখকেরা আন্তর্জাতিক সহায়তা কর্মসূচি এবং জলবায়ু উদ্যোগ থেকে নিজের দেশকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মানুষের স্বাস্থ্য ও বেঁচে থাকার সুরক্ষার জন্য এই ক্ষতিকর নীতিগুলো পরিবর্তন করে অর্থবহ জলবায়ু পদক্ষেপ এগিয়ে নেওয়া এখন অত্যন্ত জরুরি’।

তবে আশার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘উৎসাহব্যঞ্জকভাবে, এটি করার মাধ্যমে একই সাথে বড় ধরনের এবং তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া সম্ভব’। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির ১০ শতাংশই এসেছে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাত থেকে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.