আপনি পড়ছেন

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস বলেছেন, বার্লিন আঙ্কারাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) দেখতে চায় এবং পররাষ্ট্রনীতিতে তুরস্কের ভূমিকার ওপর তারা গুরুত্ব দেয়। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব গভীর করার ওপর জোর দেন এবং নিরাপত্তা থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

ফ্রিডরিখ মের্ৎস

চ্যান্সেলর হিসেবে প্রথমবার তুরস্ক সফরে এসে আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মের্ৎস জানান, তিনি তুরস্কের ইইউ সদস্যপদের বিষয়ে ইউরোপীয় পর্যায়ে একটি কৌশলগত আলোচনা শুরু করতে চান এবং এ নিয়ে কোপেনহেগেন নীতিমালার শর্তগুলো নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই আলোচনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

মের্ৎস আরও বলেন, বিশ্ব একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক পর্বে প্রবেশ করেছে, যেখানে বৃহৎ শক্তিগুলো বিশ্ব রাজনীতিকে রূপ দেবে। তিনি যোগ করেন, ‘একজন জার্মান ও ইউরোপীয় হিসেবে আমাদের অবশ্যই কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও গভীর করতে হবে এবং তুরস্ককে এর বাইরে রাখা যাবে না। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সকল পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে তুরস্ক একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ তিনি নিরাপত্তা নীতিতে তুরস্কের সঙ্গে জার্মানির ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি

বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান মের্ৎস। তিনি বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতিতে অগ্রগতি খুবই ইতিবাচক। প্রথমবারের মতো একটি স্থায়ী শান্তির আশা তৈরি হয়েছে।’ গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুরস্কের ভূমিকার জন্য প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তুরস্ক, কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এই প্রক্রিয়া সম্ভব হতো না। এটি সম্ভব করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’

মের্ৎস ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এর পর গাজায় ইসরায়েলের চালানো সহিংসতাকে ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০-দফা পরিকল্পনার অধীনে এই প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, হামাসকে বাদ দিয়ে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা উপস্থিতি ও শাসনব্যবস্থা প্রয়োজন।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, হামাসের কাছে বোমা বা পারমাণবিক অস্ত্র নেই, কিন্তু ইসরায়েলের কাছে আছে। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল গতকালও এসব অস্ত্র ব্যবহার করে গাজায় হামলা চালিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘জার্মানি, আপনি কি এটা দেখেন না?’

হলোকাস্টের অপরাধবোধ থেকে জার্মানি ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মের্ৎস বলেন, ‘জার্মানি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফেরা লক্ষ লক্ষ ইহুদির জন্য এটি একটি আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। জার্মানি সবসময় ইসরায়েলের পাশে থাকবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে আমরা সরকারের প্রতিটি সিদ্ধান্তকে সমালোচনা ছাড়াই সমর্থন করি।’

তুরস্কের ইউরোফাইটার ক্রয়

তুরস্কের ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মের্ৎস। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বিষয়ে একমত—এই বিমানগুলো আমাদের যৌথ নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে। আমরা নিরাপত্তা নীতির ক্ষেত্রে একটি নতুন কৌশলগত আলোচনা শুরু করব এবং আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করব।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন যে এই অংশীদারত্ব পরিবহন এবং রেলপথের মতো ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।

ন্যাটো মিত্র হিসেবে জার্মানি ও তুরস্কের স্বার্থ এক উল্লেখ করে মের্ৎস বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসী সংশোধনবাদ ইউরোপ এবং সমগ্র আটলান্টিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ কারণে আমরা দ্য হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলো দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করছি।’

অন্যান্য বিষয়

অভিবাসন বিষয়ে দুই দেশের সহযোগিতা ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেন মের্ৎস। তিনি জানান, মে মাসে তারা ২০২৪ সালের পুরো সময়ের চেয়ে বেশি সংখ্যক অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছেন এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে মের্ৎস জানান, বার্লিন ও আঙ্কারা একমত যে ইউক্রেনের যুদ্ধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হওয়া দরকার। রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে সজ্জিত করার বিষয়ে অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।

ইউরোপে ক্রমবর্ধমান বর্ণবাদ ও বিদেশি-বিদ্বেষ মোকাবিলার বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘জার্মানি এবং ইউরোপ এর কারণ নির্বিশেষে এর বিরুদ্ধে লড়াই করে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, জার্মানি একটি উন্মুক্ত, স্বাধীন এবং উদার দেশ, যেখানে খ্রিস্টান এবং মুসলিম উভয়ই সংবিধানের অধীনে সুরক্ষিত।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.