কোরআন ছাপার নির্ভুলতা যাচাইয়ে এআই-চালিত সিস্টেম চালু

মালয়েশিয়া প্রথমবারের মতো কোরআন প্রকাশনা ও ছাপার নির্ভুলতা যাচাইয়ের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু করেছে। ‘ইন্টেলিজেন্স তাশিহ আল-কোরআন’ (আইটিএকিউ) নামের এই আধুনিক প্রযুক্তি কোরআন প্রকাশনার যেকোনো ত্রুটি দ্রুত ও নির্ভুলভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে দেশটিতে কোরআন মুদ্রণ ও প্রকাশনা এক নতুন যুগে প্রবেশ করল।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সেপাংয়ে এক অনুষ্ঠানে দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শামসুল আনোয়ার নাসারাহ এই ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, কোরআন মুদ্রণ নিয়ন্ত্রণ ও অনুমোদন বোর্ডের (এলপিপিপিআইকিউ) নেতৃত্বে চালু হওয়া আইটিএকিউ ব্যবস্থাটি কোরআন সংরক্ষণের কাজকে আরও শক্তিশালী করবে।

শামসুল আনোয়ার বলেন, ‘আইটিএকিউ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোরআনের পবিত্রতা রক্ষার কাজ আরও দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্যেও আমরা কোরআনের মৌলিকত্ব ও শরিয়াহসম্মত মান বজায় রাখার বিষয়টি সর্বাগ্রে রাখছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই বোর্ড কোনো উন্নয়নের প্রতিবন্ধক নয়, বরং এমন এক সুরক্ষা প্রাচীর, যা পাঠ ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে কোনো বিভ্রান্তি বা ভুলের আশঙ্কা দূর করে।’

এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ‘প্রফেশনালিজম মডিউল ফর কোরআন ভেরিফিকেশন প্যানেলস’ (প্রোকুরআন) নামে আরেকটি মডিউল চালু করেছে। এর লক্ষ্য হলো কোরআন যাচাই ও পর্যালোচনায় নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি করা।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৫৩ হাজারের বেশি কোরআন সম্পর্কিত পাঠ্য ও উপকরণ জব্দ করা হয়েছে এবং এ সময়ে ২৯৫টি মামলা করা হয়। শুধু রমজান মাসেই ২০১টি মামলা হয়েছে। গত মার্চ মাসের ৭ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত পরিচালিত ‘অপস মুলিয়া’ অভিযানে নয় লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইটিএকিউ ব্যবস্থা চালুর ফলে কোরআন যাচাইয়ের সময় বহুলাংশে কমে আসবে। ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম দেশেও এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।