সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ, ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা বৈরুতের

ইসরায়েলি সেনাদের হামলার বিরুদ্ধে লেবাননের সেনাবাহিনীকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর এই প্রথম তিনি এমন কোনো নির্দেশ দিলেন। দক্ষিণ লেবাননের ব্লিদা শহরে ইসরায়েলি হামলায় একজন সরকারি কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পরদিন তিনি এই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন।

বুধবার রাতে ব্লিদা শহরের একটি পৌরসভা ভবনে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট আউন বলেন, এটি ইসরায়েলি আগ্রাসনের একটি চলমান ধারা। বৃহস্পতিবার বৈরুতের বাবদা প্রাসাদে সেনাপ্রধান জেনারেল রুডলফ হাইকালের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি জানান, যুদ্ধবিরতি তদারকি কমিটির বৈঠকের ঠিক পরদিনই এই হামলা চালানো হলো। তার মতে, এই কমিটির দায়িত্ব শুধু ঘটনা লিপিবদ্ধ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না, বরং নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে ইসরায়েলকে বাধ্য করাও এর কাজ।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ব্লিদার ওই পৌর ভবনটি সম্প্রতি হিজবুল্লাহ তাদের কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছিল। তবে হিজবুল্লাহ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি প্রেসিডেন্ট আউনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ‘লেবাননের সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে আমরা পূর্ণ সমর্থন দেব।’

বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ আরও জানায়, সরকারের উচিত গত ১১ মাসের নীতি থেকে সরে এসে একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা, যা ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করে লেবাননের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।

এর আগে গত আগস্টে লেবানন সরকার দেশের সব অস্ত্র রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিল। কিন্তু হিজবুল্লাহ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জানায়, দক্ষিণ লেবাননের দখলকৃত পাঁচটি সীমান্ত চৌকি থেকে ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে সরে না যাওয়া পর্যন্ত তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে না।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই হামলা পূর্ণাঙ্গ সামরিক অভিযানে রূপ নেয়। নভেম্বরে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, ইসরায়েল জানুয়ারির মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি রাখেনি এবং এখনো দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি সীমান্ত পোস্টে অবস্থান করছে, যা নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।