জেলেনস্কি: নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার বাজেট ঘাটতি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে আগামী বছর রাশিয়ার বাজেটে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঘাটতি দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানান, কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে এই ঘাটতির পরিমাণ ১৩০ বিলিয়ন ডলারেও পৌঁছাতে পারে। ইউক্রেনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ইউক্রিনফর্মের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো যে তাদের বাজেটে বড় ধরনের ধস নামাবে, তা আমরা বুঝতে পারছি।’ তিনি রাশিয়ার আয়ের প্রধান উৎস জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে চীনের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চীন প্রতিবছর রাশিয়া থেকে ১২০ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি আমদানি করে। এর মাধ্যমে দেশটি রাশিয়ার বড় সহায়কে পরিণত হয়েছে, যা অস্বীকার করার উপায় নেই।’

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, যেসব দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি কমিয়ে এনেছে, তারাই ইউক্রেনের প্রকৃত বন্ধু। এ প্রসঙ্গে তিনি কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের কথা বলেন, যারা আমদানি প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনেছে। তবে ভারত, চীন, তুরস্ক ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো আমদানি বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা নজরে রাখছি এবং এর সমাধানের জন্য আমাদের স্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।’

আগামী ২০ নভেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা চাই কোনো দেশ যেন এ নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় না চায়। আমরা জানি, হাঙ্গেরি ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করছে যাতে তারা আমদানি অব্যাহত রাখতে পারে। বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা তা নিয়েও কাজ করছি।’

জেলেনস্কির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া আগামী বছর ২১০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক বাজেট নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আর্থিক সক্ষমতা সীমিত করে তাদের সামরিক বাজেট থেকে অর্থ কেড়ে নেওয়া অপরিহার্য।’ তিনি আরও জানান, রাশিয়া এফপিভি ধরনের আক্রমণাত্মক ড্রোন ও গাইডেড বোমার উৎপাদন বাড়াতে চায়। তবে তাদের সেই সক্ষমতা এখন নেই।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র গত ২৩ অক্টোবর রাশিয়ার তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওইলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জেলেনস্কির মতে, শুধু এই নিষেধাজ্ঞার কারণেই রাশিয়ার বার্ষিক ক্ষতি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। একই দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম দফার নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেছে।