বিএনপির শীর্ষ নেতা ও হেভিওয়েট প্রার্থীরা যেসব আসনে লড়বেন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭ আসনে দলের একক প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তালিকা প্রকাশ করেন। প্রার্থী তালিকায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি একাধিক হেভিওয়েট ও জ্যেষ্ঠ নেতার নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দলের শীর্ষ দুই নেতা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবারও একাধিক আসনে লড়বেন বলে তালিকায় দেখা গেছে। খালেদা জিয়া বগুড়ার দুটি ও ফেনীর একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, অন্যদিকে তারেক রহমান লড়বেন বগুড়া-৭ আসনে। এ ছাড়া মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ আসন থেকেই প্রার্থী হচ্ছেন।

দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির নয়জন সদস্য এবারও নির্বাচনী মাঠে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন (কুমিল্লা-১), মির্জা আব্বাস (ঢাকা-৮), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (ঢাকা-৩), ড. আবদুল মঈন খান (নরসিংদী-২), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১০), সালাহউদ্দিন আহমদ (কক্সবাজার-১), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (সিরাজগঞ্জ-২), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ভোলা-৩) ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন (দিনাজপুর-৬)।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পটুয়াখালী-১ আসনে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নোয়াখালী-৩ এ বরকত উল্লাহ বুলু, নোয়াখালী-৪ এ মোহাম্মদ শাহজাহান, ফেনী-৩ এ আবদুল আউয়াল মিন্টু, মাগুরা-২ এ নিতাই রায় চৌধুরী, কুমিল্লা-৩ এ কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ ও টাঙ্গাইল-৮ এ আহমেদ আজম খান।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্য থেকেও বেশ কয়েকজন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন। এ তালিকায় রয়েছেন মনিরুল হক চৌধুরী (কুমিল্লা-৬), আমান উল্লাহ আমান (ঢাকা-২), মাহবুব উদ্দিন খোকন (নোয়াখালী-১), জয়নুল আবদিন ফারুক (নোয়াখালী-৪), জহির উদ্দিন স্বপন (বরিশাল-১), মজিবুর রহমান সারোয়ার (বরিশাল-৫), লুৎফুজ্জামান বাবর (নেত্রকোনা-৪), তাজভীর উল ইসলাম (কুড়িগ্রাম-৩), হাবিবুর রহমান হাবিব (পাবনা-৪), মুশফিকুর রহমান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪), আফরোজা খান রিতা (মানিকগঞ্জ-৩) ও মঈনুল ইসলাম খান (মানিকগঞ্জ-২)।

সিলেট ও আশপাশের অঞ্চলেও বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতার মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে। সিলেট-১ থেকে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সিলেট-২ থেকে তাহমিনা রশদীর লুনা, সিলেট-৬ থেকে এনামুল হক চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর-২ থেকে আবুল খায়ের ভুঁইয়া এবং ফেনী-২ থেকে ভিপি জয়নাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া টাঙ্গাইল-২ থেকে আব্দুস সালাম পিন্টু, কিশোরগঞ্জ-৪ থেকে ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজার-৩ থেকে নাসের রহমান লড়বেন বিএনপির মনোনয়নে।

যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যেও কয়েকজন এবার প্রার্থী হয়েছেন। নরসিংদী-১ থেকে খায়রুল কবির খোকন, লক্ষ্মীপুর-২ থেকে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং ময়মনসিংহ-১ থেকে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এবার ভোটে নামছেন।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন আসাদুল হাবিব দুলু (লালমনিরহাট-৩), হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), মিজানুর রহমান মিনু (রাজশাহী-২), রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু (নাটোর-২), নজরুল ইসলাম মঞ্জু (খুলনা-২), আলী আজগর লবী (খুলনা-৫), ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (নেত্রকোনা-১), ড. ওসমান ফারুক (কিশোরগঞ্জ-৩), মিজানুর রহমান সিনহা (মুন্সিগঞ্জ-২), ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), এহসানুল হক মিলন (চাঁদপুর-১) ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭)।

দলীয় নেতারা জানান, এ তালিকা এখনও প্রাথমিক। কিছু আসনে জোট সমন্বয়, স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও প্রার্থী যাচাইয়ের ভিত্তিতে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তবে নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি এবার ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটে অংশ নিয়ে জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।