আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার চাপে দেশটির বিমান চলাচল ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে, যার ফলে বাতিল হচ্ছে শত শত ফ্লাইট এবং আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, অচলাবস্থার কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি ও কর্মী সংকটের কারণে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৪ শতাংশ ফ্লাইট কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তটি দেশটির ৪০টি ব্যস্ত বিমানবন্দরে কার্যকর করা হয়েছে এবং বাজেট চুক্তি না হলে আগামী শুক্রবারের মধ্যে ফ্লাইট বাতিলের হার ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এফএএ প্রশাসক ব্রায়ান বেডফোর্ড বলেন, ‘আমরা বিমান চলাচল ব্যবস্থায় চাপের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। আমেরিকান জনগণের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা পূর্বসতর্কতামূলকভাবে ফ্লাইটের সংখ্যা কমাচ্ছি।’

এই সিদ্ধান্তের ফলে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি, লা গার্ডিয়া ও নেওয়ার্ক লিবার্টি এবং লস অ্যাঞ্জেলেস ইন্টারন্যাশনাল, শিকাগো ও’হেয়ার, ডালাস-ফোর্ট ওয়ার্থ, মায়ামি, ডেনভার ও আটলান্টার হার্টসফিল্ড-জ্যাকসনের মতো বড় বিমানবন্দরগুলো প্রভাবিত হয়েছে। এসব বড় বিমানবন্দরের ওপর নির্ভরশীল ছোট আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলোতেও ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিলের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডেল্টা এয়ারলাইনস শুক্রবার প্রায় ১৭০টি, ইউনাইটেড এয়ারলাইনস ২০০টি এবং আমেরিকান এয়ারলাইনস সোমবার পর্যন্ত ২২০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে, যা প্রতিটি সংস্থার নির্ধারিত ফ্লাইটের প্রায় ৪ শতাংশ। সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনস ১০০টি ফ্লাইট বাতিলের কথা জানিয়ে ভবিষ্যতে আরও ফ্লাইট কমানোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। আমেরিকান এয়ারলাইনসের মুখপাত্র সারাহ জ্যান্টজ বলেন, ‘এই বাতিলের পরেও আমরা প্রতিদিন প্রায় ৬,০০০ ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছি।’ বিমান সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা এই পরিস্থিতিকে একটি তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের পরিবর্তে একযোগে একাধিক শহরে আঘাত হেনেছে।

গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অচলাবস্থার কারণে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার এবং ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) কর্মকর্তাদের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ন্যাশনাল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিক ড্যানিয়েলস জানান, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রতিদিন কন্ট্রোলাররা পদত্যাগ করছেন। তিনি আরও জানান, সংস্থাটিতে বর্তমানে ৪০০ কন্ট্রোলারের ঘাটতি রয়েছে, যা ২০১৯ সালের অচলাবস্থার চেয়েও মারাত্মক।

সিএনএনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, অচলাবস্থা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৫০টিরও বেশি কর্মী সংকটের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) জানিয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই ফ্লাইট কমানোর এই সিদ্ধান্ত জরুরি ছিল। এনটিএসবি চেয়ার জেনিফার হোমেনডি মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (X) এক পোস্টে জানান, ‘এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার অংশ, যা আমাদের বিমান চলাচল ব্যবস্থার মূল ভিত্তি।’

যাত্রীদের নমনীয় টিকিট কেনার এবং বিকল্প ভ্রমণের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী ব্যারি বিফল ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আপনি যদি আগামী দশ দিনের মধ্যে ভ্রমণ করেন এবং কোনো কারণে আটকা পড়তে না চান, আমি অন্য কোনো বিমান সংস্থায় একটি বিকল্প টিকিট বুক করার জন্য জোরালোভাবে সুপারিশ করছি।’ ডেল্টা, ইউনাইটেড, আমেরিকান, সাউথওয়েস্ট ও ফ্রন্টিয়ারের মতো সংস্থাগুলো জরিমানা ছাড়াই টিকিট পরিবর্তনের সুযোগ দিচ্ছে। তবে সরকারি কর্মকাণ্ডের কারণে ফ্লাইট বাতিল হলে যাত্রীদের হোটেলের আবাসন বা অন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে বিমান সংস্থাগুলো বাধ্য নয়।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে পুরো ব্যবস্থাটি সংকটের দিকে ধাবিত হতে পারে। ড্যানিয়েলস বলেন, ‘এই অচলাবস্থা যত দিন চলবে, আজকের চেয়ে আগামীকাল তত বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.