এবার ইসলামাবাদে আদালতের বাইরে বিস্ফোরণ, নিহত ১২

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের জি-১১ এলাকায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বাইরে ভয়াবহ এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৭ জন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন আইনজীবী ও নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। খবর ডন।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি দুপুরে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে আদালতের প্রধান ফটকের সামনে একটি আত্মঘাতী হামলা হয়। হামলায় ১২ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন, বলেন তিনি।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে আদালতের গেটের বাইরে হঠাৎ প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের পরপরই আগুন ধরে যায় পার্ক করা বেশ কয়েকটি গাড়িতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নিরাপত্তা ব্যারিকেডের পাশে একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া ও আগুনের শিখা উঠছে।

আইনজীবী রুস্তম মালিক বলেন, আমি গাড়ি পার্ক করে ভেতরে ঢুকতেই গেটের পাশে প্রবল শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, সবাই দৌড়াতে থাকে। আমি গেটের কাছে দুটি লাশ পড়ে থাকতে দেখি, চারপাশে গাড়ি জ্বলছিল।

ইসলামাবাদ পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি একটি ‘আত্মঘাতী হামলা’ ছিল এবং হামলাকারীর শরীরের কিছু অংশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল তদন্ত শুরু করেছে।

ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এক বিবৃতিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ একে পাকিস্তানের জন্য ‘জেগে ওঠার আহ্বান’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি। যারা মনে করেন এই যুদ্ধ শুধু আফগান সীমান্ত বা বেলুচিস্তানের দূরবর্তী অঞ্চলে সীমিত, ইসলামাবাদ আদালতের এই আত্মঘাতী হামলা তাদের জন্য সতর্কবার্তা।

তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কাবুলের শাসকদের সঙ্গে সফল আলোচনার আশা করা অবাস্তব।

সিন্ধুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লানজার হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আত্মঘাতী হামলাকারীদের কোনো ধর্ম নেই, তারা মানবতার শত্রু।
তিনি সিন্ধু পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেন এবং প্রদেশের প্রবেশপথ, মহাসড়ক, শহর ও উপশহর এলাকায় তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পাকিস্তানের রাজধানীতে দীর্ঘদিন পর এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করার ‘সংকেত’ হিসেবে দেখছে।