বদলি বাণিজ্যে স্বচ্ছতার নজির, লটারিতে কর্মস্থল পেলেন ৩০ কর্মকর্তা

বদলি প্রক্রিয়ায় ঘুষ, সুপারিশ ও তদবিরের পুরোনো সংস্কৃতি ভেঙে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। জেলার ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত ৩০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে প্রকাশ্য লটারির মাধ্যমে তাদের নতুন কর্মস্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়ার উদ্যোগে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন সম্পন্ন হয়, যা সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং একটি স্বচ্ছ প্রশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। লটারি শুরুর আগে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘স্বচ্ছ প্রশাসন নিশ্চিত করতে প্রকাশ্য লটারি ছাড়া বিকল্প নেই।’ তিনি আরও জানান, কর্মকর্তাদের সংসদীয় আসন, স্থায়ী ঠিকানা, কর্মদক্ষতা এবং সার্বিক উপযোগিতা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় তাদের নতুন কর্মস্থল নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই নজিরবিহীন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আড়াইহাজারের বিশনন্দী ইউনিয়ন থেকে নারায়ণগঞ্জ সদরের কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদে বদলি হওয়া মজিবুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক সরকারি নিয়ম মেনে দায়িত্ব পালনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। একইভাবে, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া ও সনমনপুরা ইউনিয়ন পরিষদে বদলি হওয়া মোহাম্মদ নাজমুল হক সরকার বলেন, সকলের সামনে লটারি হওয়ায় এখানে কোনো ধরনের তদবির বা অনৈতিক লেনদেনের সুযোগ ছিল না।

এদিকে, জনবল সংকটের কারণে কয়েকজন কর্মকর্তাকে দুটি ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আলীরটেক ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সম্রাট আহমেদ লটারির মাধ্যমে মদনপুর ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদে বদলি হয়েছেন। তাকে এখন দুটি ইউনিয়নের দায়িত্ব একসাথে পালন করতে হবে।

এই লটারি অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাঈমা ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট সকল ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের এই উদ্যোগ মাঠ প্রশাসনে একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।