কবে হবে নতুন পে-স্কেল? যা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার মেয়াদেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করে যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে এর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হওয়ায় বর্তমান মেয়াদে তা কার্যকর করা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব তথ্য দেন।

নতুন পে-স্কেল কার্যকর করা সম্ভব হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা জানান, বেতন কমিশনের কার্যক্রম অত্যন্ত জটিল। বেসামরিক ও সামরিক বাহিনীর জন্য গঠিত আলাদা কমিশনগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, তিনটি ভিন্ন প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেগুলোকে অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে, যা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এই প্রতিবেদনগুলো সমন্বয়ের পর সচিব কমিটিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে তা বাস্তবায়ন করা যাবে।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতিবেদনগুলো হাতে পাওয়ার পর আমরা একটি কাঠামো তৈরি করে দিয়ে যাব। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা।’

সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট অসন্তোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ক্ষোভ অপ্রত্যাশিত। দীর্ঘ আট বছর পর বর্তমান সরকারই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাই তাদের বরং ধন্যবাদ জানানো উচিত। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই কাজটি যেহেতু স্বাধীনভাবে ও গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে করা হয়েছে, তাই পরবর্তী সরকার বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।’ তিনি আরও মনে করিয়ে দেন যে, বাজেটে পে-স্কেল ছাড়াও স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

একই আলোচনায় জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন প্রসঙ্গেও কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের খাদ্য সংকট এবং ১৬ লাখ শিশুর অপুষ্টিতে ভোগার কথা বলা হয়েছে। এর জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিজস্ব পরিমাপক রয়েছে, তবে বাংলাদেশে চরম ক্ষুধা পরিস্থিতি নেই। তিনি দাবি করেন, খাদ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। সরকার খাদ্য সরবরাহ এবং ঘাটতি প্রতিরোধে সজাগ রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করা হয়েছে এবং কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দিতে ধান ও চালের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।