জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন: চার বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই এই নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করা হবে।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চারটি প্রধান বিষয়ে জনগণের মতামত জানতে এই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা একটি একক প্রশ্নের মাধ্যমে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ ভোট দিয়ে এ বিষয়ে তাদের রায় জানাবেন। বিষয়গুলো হলো:

১. নির্বাচনকালীন প্রতিষ্ঠান: তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
২. দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ: নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য এই উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন বাধ্যতামূলক থাকবে।
৩. সংসদীয় সংস্কার: নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ প্রায় ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো আইনগতভাবে বাধ্য থাকবে।
৪. অন্যান্য সংস্কার: জুলাই সনদে উল্লেখিত অন্যান্য সংস্কারমূলক বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়লে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করা হবে। এই পরিষদ সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করবে। এরপর পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে এই উদ্যোগকে দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে জনগণ সরাসরি ভোটের মাধ্যমে দেশের সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ভিত্তি স্থাপন করবে।’