আপনি পড়ছেন

ইসরায়েলের দুই বছরব্যাপী যুদ্ধে সৃষ্ট ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যেই তীব্র ঝড়ের কারণে দক্ষিণ গাজায় ৯ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিক বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছেন বলে সতর্ক করেছে সেখানকার পৌর কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার তারা এই আশঙ্কার কথা জানায়।

ছবি - সংগৃহীত

খান ইউনিস পৌরসভার মুখপাত্র সায়েব লাক্কান আনাদোলুকে জানান, আসন্ন ঝড়টি বিপজ্জনক এবং উপকূলের হাজার হাজার তাঁবু প্লাবিত করার পাশাপাশি শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও বলেন, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং বৃষ্টির পানি জমার পুকুরগুলো বিপজ্জনক মাত্রায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ফিলিস্তিনি আবহাওয়া বিভাগও শুক্র ও শনিবার উপত্যকা এবং নিচু এলাকাগুলোতে আকস্মিক বন্যার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

লাক্কান জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ এক ‘নজিরবিহীন ও বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির মুখোমুখি। শহরের সড়ক, পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার ৮৫ শতাংশেরও বেশি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৯ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে বসবাস করছে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় সৃষ্ট প্রায় দেড় কোটি টন ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করা শহরের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মিটার রাস্তা, ৩ লাখ মিটার পানির পাইপলাইন এবং ১ লাখ ২০ হাজার মিটার পয়োনিষ্কাশন লাইন ধ্বংস হয়ে গেছে, যা শহরটিকে প্রায় সম্পূর্ণরূপে অচল করে দিয়েছে।’

জ্বালানি সংকটের কারণে পয়োনিষ্কাশন কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন। এর ফলে ব্যাপকহারে পয়োবর্জ্য উপচে পড়ে পুরো এলাকা প্লাবিত হতে পারে। মুখপাত্র জানান, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ মাত্র ১৬ হাজার লিটার ডিজেল পেয়েছে, যা দিয়ে মাত্র তিন দিন কাজ চালানো সম্ভব। এ অবস্থায় পৌরসভার কর্মীরা সাধারণ যন্ত্রপাতি দিয়ে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে এবং উপত্যকার পথ পরিবর্তন করে তাঁবু ও নিচু এলাকাগুলোকে রক্ষার চেষ্টা করছেন।

গাজার কর্মকর্তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল প্রতিদিন চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি হতাহত হচ্ছে এবং খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর প্রবেশ সীমিত হয়ে পড়েছে।

লাক্কান আরও জানান, শহরের ২ হাজার ২০০টি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন নালার মধ্যে ১ হাজার ৯০০টিই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে জাতিসংঘ-সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার সহায়তায় জরুরি প্রকল্পের অধীনে অবশিষ্ট নালাগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। আসন্ন ঝড়ের সময় শহরকে প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পৌরসভার জরুরি ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ পাম্প এবং অন্যান্য সরঞ্জাম প্রয়োজন।

খান ইউনিসের পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’ হিসেবে বর্ণনা করে এই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, ধ্বংসস্তূপ অপসারণ এবং অপরিহার্য পরিষেবাগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য শহরের জরুরি আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। তিনি গাজার উপকূলে বন্যা ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকা ২০ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষকে বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানায়, ইসরায়েলি যুদ্ধে গাজায় ২ লাখ ৮২ হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা হাজার হাজার পরিবারকে শীতের শুরুতে তাঁবুতে বসবাস করতে বাধ্য করেছে। গত দুই শীতে প্রবল বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে হাজার হাজার তাঁবু ছিঁড়ে যায় বা প্লাবিত হয় এবং কাদা-পানিতে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। সেপ্টেম্বরের শেষে, গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছিল যে ভূখণ্ডটির ৯৩ শতাংশ বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুই ভেঙে পড়েছে এবং বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.