বন্ধ হচ্ছে এইচ-১বি ভিসা? মার্কিন কংগ্রেসে নতুন বিল

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী ও গবেষকদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি বাতিলের জন্য দেশটির কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এই প্রস্তাবটি পাস হলে মার্কিন প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন খাতে কর্মরত বিদেশি পেশাজীবীরা বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন।

অভিবাসনবিরোধী হিসেবে পরিচিত জর্জিয়ার কট্টর ডানপন্থী কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিন সম্প্রতি প্রতিনিধি পরিষদে এই বিলটি জমা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ভিসা কর্মসূচিকে ‘প্রতারণা ও অপব্যবহারে পূর্ণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তার দাবি, এই ভিসার সুযোগ নিয়ে বড় প্রযুক্তি কোম্পানি ও শিল্পকারখানাগুলো মার্কিন নাগরিকদের বঞ্চিত করে বিদেশিদের চাকরি দিয়ে আসছে, যা দেশের কর্মীদের জন্য মারাত্মক বঞ্চনার কারণ।

মার্জোরি টেইলর গ্রিন বলেন, বিলটি আইনে পরিণত হলে বিজ্ঞান, স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশলসহ সব খাতে মার্কিনিদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত হবে। তার মতে, ‘মার্কিনরা বিশ্বের সেরা মেধাবী জাতি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষা করাই তার মূল লক্ষ্য।’

২০০৪ সাল থেকে চালু হওয়া এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় ৮৫ হাজার বিদেশি দক্ষ কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। মূলত তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনে দক্ষ কর্মীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। অ্যামাজন, গুগল, মেটা, মাইক্রোসফট এবং অ্যাপলের মতো শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এই কর্মসূচির মাধ্যমে বহু বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ দিয়ে থাকে।

এই ভিসা কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। হাজার হাজার ভারতীয় পেশাজীবী এই ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করছেন। শুধু কাজের সুযোগই নয়, এইচ-১বি ভিসাধারীরা নির্দিষ্ট সময় পর যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্বের জন্যও আবেদন করতে পারতেন।

প্রস্তাবিত নতুন বিলে অবশ্য কিছু ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে। মার্কিন স্বাস্থ্যখাতে বিদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগের সুযোগ থাকছে। বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার বিদেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে কাজের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো, তারা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেলেও মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।