বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০০ কোটির নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, শুধু গত এক বছরেই নতুন করে ২৪ কোটিরও বেশি মানুষ অনলাইনে এসেছেন।

ছবি - সংগৃহীত

জাতিসংঘের এই সংস্থাটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক ইন্টারনেট সংযোগ বাড়াতে অব্যাহত অগ্রগতি হলেও সেবার মান, মূল্য এবং দক্ষতার ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্য রয়ে গেছে। এর ফলে কোটি কোটি মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তির পূর্ণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বের প্রায় ২২০ কোটি মানুষ এখনো ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের বাসিন্দা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি যখন দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠছে, তখন শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো, সাশ্রয়ী সেবা এবং ডিজিটাল দক্ষতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

আইটিইউর মহাসচিব ডোরিন বোগদান-মার্টিন বলেন, ‘এমন এক বিশ্বে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ, যেখানে প্রত্যেকেরই অনলাইনে থাকার মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত।’ তিনি উল্লেখ করেন, আজকের ডিজিটাল বিভাজন শুধু ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগের ওপর নির্ভর করে না, বরং এটি এখন গতি, নির্ভরযোগ্যতা, মূল্য এবং দক্ষতার দ্বারা নির্ধারিত হচ্ছে।

প্রতিবেদনে উন্নত মোবাইল প্রযুক্তির অসম প্রসারের কারণে সেবার মানের ব্যবধান আরও বাড়ছে বলে তুলে ধরা হয়েছে। আইটিইউ প্রথমবারের মতো ফাইভ-জি গ্রাহকসংখ্যার একটি হিসাব দিয়েছে, যা বর্তমানে প্রায় ৩০০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এটি মোট মোবাইল ব্রডব্যান্ড গ্রাহকসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

যদিও ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বিশ্বের ৫৫ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কথা, বাস্তবে এর ব্যবহার অত্যন্ত অসম। উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ৮৪ শতাংশ মানুষ ফাইভ-জি সুবিধার আওতায় থাকলেও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এই হার মাত্র ৪ শতাংশ। ব্যবহারের ধরনেও একই বৈষম্য দেখা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চ আয়ের দেশের একজন ব্যবহারকারী নিম্ন আয়ের দেশের একজন ব্যবহারকারীর চেয়ে প্রায় আটগুণ বেশি মোবাইল ডেটা ব্যবহার করেন।

সাশ্রয়ী মূল্য এবং ডিজিটাল দক্ষতাও বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু ডেটা-নির্ভর মোবাইল ব্রডব্যান্ডের গড় দাম কমলেও নিম্ন ও মধ্যম আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ দেশেই এই সেবা এখনো সাধ্যাতীত। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগের কেবল প্রাথমিক দক্ষতা রয়েছে। তবে অনলাইন নিরাপত্তা, সমস্যা সমাধান এবং ডিজিটাল আধেয় তৈরির মতো উন্নত দক্ষতা অর্জনের হার অনেক ধীর।

আইটিইউর টেলিকমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ব্যুরোর পরিচালক কসমাস লাকিসন জাভাজাভা জানান, কার্যকর ডিজিটাল নীতি প্রণয়ন এবং সার্বজনীন সংযোগের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য অপরিহার্য। তিনি অবকাঠামো, দক্ষতা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় টেকসই ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন, যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ডিজিটাল উন্নয়ন এখনো অর্থনৈতিক অবস্থা, লিঙ্গ এবং ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৯৪ শতাংশ হলেও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে তা মাত্র ২৩ শতাংশ। পুরুষের তুলনায় নারীরা এখনো পিছিয়ে আছেন; ৭৭ শতাংশ পুরুষ অনলাইনে থাকলেও নারীর ক্ষেত্রে এই হার ৭১ শতাংশ। শহরাঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৮৫ শতাংশ, যেখানে গ্রামাঞ্চলে মাত্র ৫৮ শতাংশ মানুষ এই সুবিধা পান। তরুণদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৮২ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও বাকিদের মধ্যে এই হার ৭২ শতাংশ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.