ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য ভারতের কাছে ওষুধশিল্প নেতাদের আহ্বান

ভারতের কাছে বিজনেস ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং স্থলপথে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের নেতারা। গতকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত ‘ফার্মাকানেক্ট’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তারা এই আহ্বান জানান। এই আয়োজনটি মূলত আগামী ২৫-২৭ নভেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য বৃহৎ ওষুধশিল্প প্রদর্শনী ‘সিপিএইচআই-পিএমইসি ইন্ডিয়া ২০২৫’ উপলক্ষে করা হয়েছে।

‘ফার্মাকানেক্ট’ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি হস্তান্তর, সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং উদ্ভাবনের মতো বিষয়গুলোতে ভারত ও বাংলাদেশের ওষুধশিল্প কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তা তুলে ধরা হয়। ভারত-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতায় ওষুধ খাতের কৌশলগত গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) সংগ্রহ, প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের একটি নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

তবে ভিসা জটিলতার কারণে পিএমইসি প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে বলে জানান ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) মহাসচিব মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের খাত থেকে ৫০০-৭০০ জন পিএমইসিতে অংশ নিতেন, দুই-তিন মাস আগেই হোটেল সংরক্ষণ করতে হতো। এ বছর মাত্র আটটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৮৩ জন আবেদন করেছেন।’

জাকির হোসেন আরও বলেন, ভারতের শক্তিশালী সমর্থনে বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের সফলতার গল্প তৈরি হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এমন কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান নেই, যাদের কারখানায় ভারতীয় যন্ত্রপাতি নেই। আমাদের প্রতিদিন কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি বা উন্নয়নমূলক সহায়তা প্রয়োজন। আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।’ তিনি বিএপিআইয়ের সভাপতি বা সম্পাদকের সুপারিশসহ ভিসার আবেদনগুলো বিশেষ বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করেন।

জাকির হোসেনের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিএপিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির জানান, ভিসা পরিস্থিতি এই খাতের ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অগ্রগতি দেখে এবং ব্যবসায়িক ভিসা আবার চালু হচ্ছে শুনে আনন্দিত, যাতে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপকরা ভ্রমণ করতে এবং তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে প্রণয় ভার্মা গত এক বছরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভিসা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সীমিত পরিচালন ক্ষমতা এবং আইনশৃঙ্খলাজনিত উদ্বেগের কারণে বেশ কয়েকটি ভিসা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় ভিসা প্রক্রিয়া ধীর হয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও জানান, ‘সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ভিসা দিচ্ছি এবং বিজনেস ভিসা পরিষেবা পুনরায় চালু করেছি। সীমিত সক্ষমতার মধ্যে আমরা জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’