বিশ্ব বেলেমের দিকে তাকিয়ে, সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাব মোকাবিলার সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে তিনি অভিযোজন তহবিল, কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে সাহসী সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানান।

এক সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘একটি বিষয় স্পষ্ট: আমাদের হাতে সময় খুব কম এবং বিশ্ব বেলেমের দিকে তাকিয়ে আছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীও তাকিয়ে আছে, যারা তাদের ভেসে যাওয়া ঘরবাড়ি, নষ্ট ফসল আর হারানো জীবিকার হিসাব কষছে… এবং প্রশ্ন করছে: আমাদের আর কত কষ্ট ভোগ করতে হবে?’
জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, কয়েক দশকের অস্বীকার এবং বিলম্বের পর বিজ্ঞান বলছে যে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার সীমা সাময়িকভাবে ছাড়িয়ে যাওয়া এখন ‘অনিবার্য’, যা সম্ভবত ২০৩০-এর দশকের শুরুতেই ঘটবে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বনেতাদের হাতে এখনো এই শতাব্দীর শেষে তাপমাত্রা আবার কমিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে, যদি দেশগুলো এই উষ্ণতা বৃদ্ধিকে ‘যতটা সম্ভব ক্ষুদ্র, স্বল্পস্থায়ী এবং নিরাপদ’ রাখতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়।
গুতেরেস ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেন, তারা এ বছর অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে এই সহায়তা তিনগুণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অভিযোজন হলো পুনর্গঠন এবং ভেসে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য। লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য এটি টিকে থাকা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।’
জাতিসংঘ প্রধান ‘ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে’ দ্রুত অর্থায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি ‘কার্যক্রমের জন্য খোলা থাকলেও এখনো মূলত খালি’। তিনি উল্লেখ করেন, আমাজনের মতো বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়।
গুতেরেস বলেন, বিভিন্ন দেশের বর্তমান জলবায়ু পরিকল্পনাগুলো বিশ্বকে ‘দুই ডিগ্রির অনেক বেশি’ উষ্ণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যা ‘অনেকের জন্য মৃত্যুদণ্ডের শামিল’। তিনি কার্বন নির্গমন নাটকীয়ভাবে কমানোর আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশগুলোকে, বিশেষ করে প্রধান নির্গমনকারী দেশগুলোকে এখনই নির্গমন সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে নিট-শূন্য লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হবে।
কপ-২৮-এ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার চুক্তিটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এটি জলবায়ুর জন্য অপরিহার্য এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, জ্বালানি নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীল শাসনের একটি পরীক্ষা।’ গুতেরেস জানান, ৮০টিরও বেশি দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার একটি রূপরেখার আহ্বানকে সমর্থন করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি কপ-৩০-এর মন্ত্রী ও আলোচকদের উদ্দেশে একটি সরাসরি বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘অনুগ্রহ করে একটি উচ্চাভিলাষী সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য সরল বিশ্বাসে আলোচনা করুন। দেড় ডিগ্রিই আপনাদের একমাত্র সীমারেখা হওয়া উচিত। এটি নেতৃত্বের সময়। সাহসী হোন। বিজ্ঞানকে অনুসরণ করুন। মুনাফার ঊর্ধ্বে মানুষকে স্থান দিন। এবং দয়া করে শেষ লক্ষ্যের দিকে নজর রাখুন।’
সম্মেলন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কী বার্তা দেবে—এমন প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, ‘আমরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।’ ট্রাম্প এই প্রক্রিয়ায় ইতিবাচকভাবে যুক্ত হতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আশা সবার শেষে মরে।’
ট্রাম্প প্রশাসন ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত এই জলবায়ু সম্মেলনে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধিদল না পাঠালেও কপ-৩০-এ যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি রয়েছে। ১৯৯৫ সালে প্রথম কপ সম্মেলনের পর এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। যুক্তরাষ্ট্রের গভর্নর, মেয়র এবং রাজ্য ও শহরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরসহ ১০০ জন নেতার একটি দল ‘যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু জোটে’র অংশ হিসেবে বেলেমে ভ্রমণ করেছে। কপ-৩০-এ উপস্থিত থাকা অন্যতম প্রভাবশালী মার্কিন ব্যক্তিত্ব, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম এই সম্মেলনে যুক্ত না হওয়ার জন্য ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.