ভোটের ময়দানে ‘জান্নাতের টিকিট’, জামায়াতকে বিঁধলেন ফখরুল

জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেওয়াকে ‘জান্নাতের টিকিট’ পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এই ধরনের দাবির উৎস ও ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের প্রবণতার নিন্দা জানিয়েছেন।

শনিবার রাজধানীতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, ইসলাম কখনো রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহারের অনুমতি দেয় না এবং এ ধরনের বিষয়গুলো এখন জাতির সামনে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা উচিত।

জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলটি বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকলেও গত দশ বছরে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো দৃশ্যমান কর্মসূচি ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা শুনেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে তারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অংশ নিয়েছিল। আমরা এভাবে রাজনীতি করি না, আমরা সরাসরি মাঠে থেকে লড়াই করি।’

বিএনপির ত্যাগ ও সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরে মহাসচিব বলেন, দলের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং ২০ হাজারের বেশি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে সংসদ সদস্যসহ প্রায় ১,৭০০ জনকে গুম করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে ছয় বছর ধরে কারাবন্দী রাখা এবং তারেক রহমানের নির্বাসিত জীবনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় লোক দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা মুখে ইসলামের কথা বললেও তা বিশ্বাস করে না। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো দেশে কি জাতীয় মসজিদের খতিব সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়? এটিই প্রমাণ করে যে নিয়োগটি ছিল রাজনৈতিক।’

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট দলের সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়েও কথা বলেন ফখরুল। তিনি বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির জন্য চিৎকার করলেও এখন সেই দলই নির্বাচনের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে। তার মতে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ ব্যবস্থা বোঝে এবং প্রস্তাবিত গণভোটের জটিল প্রক্রিয়া তাদের জন্য বিভ্রান্তিকর হবে।

‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার কেয়ারটেকারগণের দেশ ও জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অফ গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা শাহ্ মো. নেছারুল হকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মুহাম্মদ রফিক উল ইসলাম।