রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বড় অগ্রগতি, প্রস্তাবে পরিবর্তন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি সংশোধিত শান্তি প্রস্তাব নিয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। নতুন এই প্রস্তাবে ইউক্রেনের পূর্ণ সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা আগের একটি প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগ নিরসনে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রোববার জেনেভায় দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, আলোচনাটি অত্যন্ত ‘ফলপ্রসূ ও অর্থবহ’ হয়েছে। একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উভয় পক্ষ একমত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউক্রেনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং পুনর্গঠন নিশ্চিত করতে কিয়েভ ও ওয়াশিংটন একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া মূল ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে ন্যাটোর ভূমিকা সংক্রান্ত একটি সংশোধনও রয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যকার মতপার্থক্য কমাতে সাহায্য করেছে। রুবিও দাবি করেন, আলোচনায় ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে এবং ঝুলে থাকা বিষয়গুলো সমাধানে আরও কিছু সময় লাগলেও তিনি সফল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

তবে ইউক্রেন কোনো ভূখণ্ড ছাড়তে রাজি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তারিত কিছু জানাননি। এর আগে ট্রাম্পের দেওয়া মূল প্রস্তাবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে সীমিত করা এবং ক্রিমিয়া, লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের ওপর রাশিয়ার দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ফাঁস হওয়া সেই প্রস্তাব মস্কোর পক্ষে অতিরিক্ত সুবিধাজনক বলে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে এক ভাষণে বলেছিলেন, আগের পরিকল্পনাটি ইউক্রেনকে ‘মর্যাদা হারানো আর মূল অংশীদার হারানোর’ মতো কঠিন পছন্দের মুখে ফেলে দিয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েনও জোর দিয়ে বলেছিলেন, যেকোনো শান্তি পরিকল্পনাকে অবশ্যই ইউক্রেনের স্বাধীন সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

নতুন প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মস্কোর কাছেও উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, ‘এটি একটি জীবন্ত নথি, যা আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হবে’। এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত শুক্রবার জানিয়েছিলেন, ট্রাম্পের প্রাথমিক পরিকল্পনা একটি চূড়ান্ত চুক্তির ভিত্তি হতে পারে। তবে কিয়েভ আলোচনায় না এলে রাশিয়া আরও অগ্রসর হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।