উত্তপ্ত লেবানন: যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধের আশঙ্কা

ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করেনি লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটির প্রধান নাঈম কাসেম জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই অবস্থানের কথা জানান।

নাঈম কাসেম তার ভাষণে বলেন, ‘প্রতিশোধমূলক হামলার সময় ও ধরন হিজবুল্লাহ নিজেই ঠিক করবে।’ যুদ্ধ হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এই সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনি যুদ্ধ না হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, ‘ইসরায়েলের বৃহত্তর বিমান হামলার হুমকি হিজবুল্লাহকে কোনোভাবেই ভয় দেখাতে পারবে না।’

উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার হাইথাম আলি তাবতাবাই নিহত হন। এই ঘটনাকে সংগঠনটির সামরিক কাঠামোতে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাঈম কাসেমের এই বক্তব্যই হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া।

তাবতাবাই নিহত হওয়ার পর লেবাননজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে যে, ইসরায়েল হয়তো হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে বড় ধরনের কোনো অভিযান চালাতে পারে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও লেবানন সরকারের ওপর গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ বাড়িয়েছে।

নাঈম কাসেম আরও বলেন, লেবাননকে সম্ভাব্য যেকোনো সংঘাত মোকাবিলায় নিজেদের সেনাবাহিনী ও জনগণের ওপর নির্ভর করে প্রস্তুত থাকতে হবে। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ধর্মগুরু পোপ লিওর আসন্ন লেবানন সফর এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।

এদিকে, কাসেমের বক্তব্য প্রচারের কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাভিখাই অ্যাদ্রেই এক বিবৃতিতে জানান, লেবাননের সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর অস্ত্র উদ্ধারে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না। তিনি দাবি করেন, ‘হিজবুল্লাহ এখনো দক্ষিণ লেবাননে গোপনে তাদের অস্ত্রভাণ্ডার টিকিয়ে রেখেছে এবং সেনাবাহিনীকে প্রভাবিত করছে।’

হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যতদিন ইসরায়েল লেবাননের অভ্যন্তরে হামলা চালাবে এবং দক্ষিণের পাঁচটি সীমান্তচৌকি দখলে রাখবে, ততদিন তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে না।