এক মার্কায় নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিলেন নাহিদ ইসলাম

জুলাই বিপ্লবের চেতনায় বিশ্বাসী ও পরিবর্তনের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে নিয়ে এক ছাতার নিচে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে তারা জোটবদ্ধভাবে একটি মাত্র প্রতীকেই লড়তে চান। পুরোনো রাজনৈতিক ধারার বাইরে গিয়ে প্রকৃত পরিবর্তনের লক্ষ্যেই এই ঐক্যের প্রচেষ্টা চলছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ডিআরইউতে তিনটি দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি নির্বাচনের মাঠের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গেও তাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা গায়ের জোরে বা ধর্মকে পুঁজি করে ভোট আদায়ের স্বপ্ন দেখছে, তাদের পতন অনিবার্য। তার মতে, আগামী দিনে নির্বাচনে যদি কেউ দখলদারিত্ব চালায় বা মানুষের সাথে প্রতারণা করে, তবে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এই নতুন জোট কেবল ভোটের সমীকরণ মেলাতে নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করবে। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মূল উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, জরুরি বিষয়গুলো পাশ কাটিয়ে অপ্রয়োজনীয় ইস্যুতে দেশকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো আড়াল করে রাখা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সিটের লোভ দেখিয়ে অনেককে তাদের জোটে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এমন সব অনৈতিক প্রস্তাব তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে জানান তিনি।

নির্বাচনী প্রচারণায় বাধার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান। নাহিদ উল্লেখ করেন, বরিশালে ফুয়াদের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তাকে হেনস্তা করা হয়েছে। অথচ সবাই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিল, যেখানে জনগণ নির্ভয়ে তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে এখনো জবরদস্তি ও আধিপত্য বিস্তারের চিত্র দেখা যাচ্ছে।

ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন ও ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে অতীতে একটি দল দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দেন নাহিদ। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভোটকেন্দ্রে ফ্যাসিবাদী আচরণ ও পেশিশক্তির মহড়া প্রদর্শন করলে তার পরিণাম ভালো হবে না। অহংকারের পতন ঘটাতেই জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তাই নির্বাচন প্রক্রিয়াতেও জুলাইয়ের চেতনার শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।