দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন: কে পাচ্ছেন কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব?

নির্বাচন সামনে রেখে দুই ছাত্র উপদেষ্টার সম্ভাব্য পদত্যাগের পর তাদের দায়িত্বাধীন মন্ত্রণালয়গুলোর ভার কার কাঁধে যাবে, তা নিয়ে প্রশাসনে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। শূন্য হতে যাওয়া পদগুলোতে নতুন কাউকে নিয়োগ না দিয়ে বর্তমান উপদেষ্টাদের ওপরই বাড়তি দায়িত্ব অর্পণ করা হতে পারে। আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদেরই একাধিক সদস্য। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বর্তমানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন।

পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ভার উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের ওপরও অর্পণ করা হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তিনি এখন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পেতে পারেন বলে আলোচনা চলছে। রিজওয়ানা বর্তমানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক আলী রীয়াজকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করতে পারেন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সরকারের বিভিন্ন সূত্র আভাস দিয়েছে, মেয়াদের এই শেষ সময়ে এসে নতুন করে উপদেষ্টা নিয়োগের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে পদত্যাগের ঘটনা ঘটলে বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যেই মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব বণ্টন করা হতে পারে। বর্তমানে মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংবাদ সম্মেলনেই তিনি নিজের পদত্যাগ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন। প্রবল গুঞ্জন রয়েছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন এবং ওই দিনের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকটিই হতে পারে তাদের শেষ অংশগ্রহণ।

চলতি মাসের ১০ বা ১১ তারিখের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হতে পারে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না নেওয়া—যেটাই হোক না কেন, তাদের পদত্যাগের বিষয়ে বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের অনেক সদস্যই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বর্তমান কাঠামোতে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়া ২২ জন উপদেষ্টা রয়েছেন। দুজন সরে দাঁড়ালে এই সংখ্যা ২০-এ নেমে আসবে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রধান উপদেষ্টা একাই পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া দশজন বাদে বাকি সব উপদেষ্টাই বর্তমানে একাধিক দপ্তরের কাজ সামলাচ্ছেন।