যুক্তরাষ্ট্রকে বিমানবন্দর ব্যবহারে অনুমতি: গ্যাস চুক্তি বাতিল করল ভেনেজুয়েলা

যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন সেনাবাহিনীকে নিজেদের বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো। সোমবার দেশটির সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন বাহিনী এই সুবিধা পাবে। এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে রসদ সরবরাহ ও সরঞ্জাম পুনঃভর্তির মতো কার্যক্রমকে উল্লেখ করা হয়েছে।

ত্রিনিদাদের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ দেশটির সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাস সংক্রান্ত সব ধরনের চুক্তি ও আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সরকার সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দখল করা একটি তেল ট্যাঙ্কারের ঘটনায় অংশ নিয়েছে, যা এক ধরনের জলদস্যুতা।’ রদ্রিগেজ আরও বলেন, ‘টোবাগোতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক রাডার স্থাপনের মাধ্যমে ত্রিনিদাদ তাদের ভূখণ্ডকে ভেনেজুয়েলা আক্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীতে পরিণত করেছে।’

এর আগে ত্রিনিদাদ সরকার জানিয়েছিল, টোবাগোতে স্থাপিত মার্কিন রাডারটি স্থানীয় অপরাধ দমনে ব্যবহৃত হবে এবং কোনো তৃতীয় দেশের ওপর হামলার জন্য তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। ভৌগোলিকভাবে ভেনেজুয়েলা ও ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর মধ্যে সবচেয়ে কাছের দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটার। দ্বীপদেশটির দুটি প্রধান বিমানবন্দর হলো পিয়ারকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এএনআর রবিনসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

ত্রিনিদাদের বিরোধী দলীয় সিনেটর ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরি ব্রাউন সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক বা নিয়মিত সহযোগিতা নয়। এতে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সীমান্ত উত্তেজনা ও আগ্রাসনের সহযোগী হয়ে উঠছে।’ তার মতে, এই অনুমতি দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে’ পরিণত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন হামলায় ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ওই অঞ্চলে একটি বড় নৌবহর মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার্কিন বিমানবাহী রণতরীও রয়েছে।

এর আগে ত্রিনিদাদ ও ভেনেজুয়েলা একটি যৌথ গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের চুক্তিতে পৌঁছেছিল। কিন্তু ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্টের নতুন ঘোষণায় সেই চুক্তি এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।