শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক: হাদির স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্ব নিচ্ছে সরকার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের এই অমর সৈনিক’-এর স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের আজীবন দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা জানান। এর আগে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান টেলিফোনে ড. ইউনূসকে হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই লড়াকু তরুণ নেতা।

শরিফ ওসমান হাদিকে দেশপ্রেম ও প্রতিবাদের ‘অনন্য আইকন’ হিসেবে অভিহিত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘হাদির অকাল প্রয়াণ দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার ধৈর্য ও দৃঢ়তা তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’

কর্মসূচি অনুযায়ী, শনিবার দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এ ছাড়া শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদে এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

বর্বরোচিত এই হামলার ঘটনায় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।

ভাষণে ড. ইউনূস সিঙ্গাপুর সরকারের আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ডা. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান ব্যক্তিগতভাবে হাদির চিকিৎসার তদারকি করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে গুজব ও অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরাজিত শক্তি ও সন্ত্রাসীরা বিপ্লবীদের ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু রক্তপাত বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। হাদির স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।