নির্বাচন পণ্ড করার চেষ্টা রুখে দিতে যৌথ বাহিনীকে ইসির কঠোর নির্দেশ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা সহ্য করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র ‘মানবিকতা’ বা মায়া দেখানোর প্রয়োজন নেই বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এই হুঁশিয়ারি দেন।

ব্রিফিংয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমরা সকল বাহিনী ও সংস্থাকে পরিষ্কারভাবে নির্দেশ দিয়েছি- যারা মানবিক, আমরা তাদের প্রতি মানবিক থাকব। কিন্তু যারা দস্যুতা করতে চায়, ভাঙচুর করতে চায়, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চায় কিংবা আমাদের ভাইদের হত্যা করতে চায়, তাদের প্রতি দয়া দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই। বার্তাটি অত্যন্ত পরিষ্কার।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সকল বাহিনীকে মানবিক আচরণ ও মানবাধিকার রক্ষার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমিশন মনে করছে, কেউ কেউ এই মহানুভবতার সুযোগ নিয়ে নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তারা মূলত শহর এলাকাগুলোকে টার্গেট করছে।

তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, যারা নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, তারা সফল হবে না। যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দমনে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। কমিশনার বলেন, প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সংস্থাগুলো আমাদের আশ্বস্ত করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে একটি বিশেষ প্রটোকল তৈরি করা হয়েছে। যারা নিরাপত্তা চেয়েছেন, তাদের সেই অনুযায়ী সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরেও যদি কোনো প্রার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তবে পুলিশকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বিজিবি, র‍্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি এবং এনএসআই-ডিজিএফআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধানেরা আলাদাভাবে সিইসির সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কমিশনকে আশ্বস্ত করেন।