পাকিস্তানের কাছে উড়ে গেল ভারত, ফের পুরস্কার মঞ্চে নাটক

দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে বড় জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচে ভারতকে ১৯১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। তবে মাঠের খেলার ফলাফলের পাশাপাশি ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের ঘটনাও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নকভির হাত থেকে রানার্সআপ ট্রফি গ্রহণ করেনি ভারতীয় জুনিয়র দল।

ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ৩৪৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। পাকিস্তানের এই পাহাড়সম রানের ভিত্তি গড়ে দেন সামির মিনহাস। তিনি মাত্র ১১৩ বলে ১৭২ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ১৭টি চার ও ৯টি ছক্কা। মাত্র ৭১ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। এর আগে টুর্নামেন্টে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে রেকর্ড ১৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেও ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে ফাইনালে আহমেদ হোসেনের ৫৬ রানের সহযোগিতায় তার ইনিংসটিই গড়ে দেয় ম্যাচের ব্যবধান। ভারতের হয়ে দীপেশ দেবেন্দ্রান সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া হেনিল প্যাটেল ও খিলান প্যাটেল দুটি করে উইকেট নেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। মাত্র ৪৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ১০০ রানের আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা। শেষ পর্যন্ত ১৫৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারতীয় দল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন দীপেশ দেবেন্দ্রান, আর ওপেনার বৈভব সূর্যবংশী করেন ২৬ রান। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে আলি রাজা একাই ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন। দুটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ সায়েম, আব্দুল সুবহান ও হুজাইফা আহসান।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হতে প্রায় আধা ঘণ্টা দেরি হয়, যা অনেকের মনে বড়দের এশিয়া কাপ ফাইনালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। সেই আসরেও মহসিন নকভি ট্রফি না দিয়েই চলে গিয়েছিলেন। এবার অনূর্ধ্ব-১৯ ফাইনালে নকভি মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও ভারতীয় দল তার হাত থেকে পুরস্কার নেয়নি। রানার্সআপ হওয়ায় এসিসি প্রধানের কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার প্রথাগত বাধ্যবাধকতা এড়ানো সহজ হয়েছে তাদের জন্য। পরিবর্তে আইসিসি সহযোগী সদস্য দেশের চেয়ারম্যান মুবাসির উসমানি মঞ্চ থেকে নেমে এসে বৈভব সূর্যবংশীদের হাতে পদক তুলে দেন। ভারতীয় ক্রিকেটাররা কেউ মঞ্চেও ওঠেননি।

অন্যদিকে, মহসিন নকভি পাকিস্তানের বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি ও পদক তুলে দেন এবং তাদের সঙ্গে ছবি তোলায় অংশ নেন। তিনি মাঠ ঘুরে ক্রিকেটারদের উল্লাসেও যোগ দেন। তবে ভারতীয় দল নিজেদের পদক নিয়ে সোজা সাজঘরে ফিরে যায়। পুরো টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব কিংবা ফাইনালে দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে কোনো করমর্দন বিনিময় হয়নি, যা মাঠের বাইরের দূরত্বকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।