জব্দ করা তেল বিক্রি বা ব্যবহারের ইঙ্গিত ট্রাম্পের, মাদুরোকে সতর্কবার্তা

ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে জব্দ করা তেল যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে অথবা বিক্রিও করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই তার জন্য ‘বুদ্ধিমানের কাজ’ হবে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভেনেজুয়েলা সংকট ও তেল জব্দ প্রসঙ্গে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

মাদুরোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, সেটাই হতে পারে। তবে বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করছে, সে কী করতে চায়। আমার মনে হয়, তার জন্য সেটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’

এ সময় চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি সে কঠোর হওয়ার চেষ্টা করে, তবে সেটাই হবে তার শেষবারের মতো কঠোর হওয়ার সুযোগ।’

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশলের অংশ হিসেবে ওই অঞ্চলের আশপাশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার জলসীমার কাছাকাছি এলাকায় মাদক পাচারের অভিযোগে বিভিন্ন জাহাজ লক্ষ্য করে দুই ডজনের বেশি সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ করা বা সেখান থেকে বের হওয়া সব তেলবাহী জাহাজের ওপর কার্যত অবরোধ আরোপ করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনেজুয়েলার কাছে একটি তেলবাহী জাহাজের পিছু নেয় মার্কিন কোস্ট গার্ড। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি ছিল এ ধরনের তৃতীয় অভিযান।

জব্দকৃত তেলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘হয়তো আমরা এটা বিক্রি করব, অথবা রেখে দেবো। এটি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত রিজার্ভ পূরণেও ব্যবহার করা যেতে পারে।’

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘সে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু নয়। সে খুব খারাপ মানুষ। তাকে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে।’ এছাড়া ভেনেজুয়েলায় উৎপাদিত কোকেন যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের জন্য মাদুরোকেই দায়ী করেন তিনি।

বিশ্লেষকদের মতে, জব্দ করা তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান এবং প্রকাশ্য হুমকি ভেনেজুয়েলার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে। এতে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনার দিকে মোড় নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।