ক্ষমা চেয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন রাশেদ খাঁন

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন মো. রাশেদ খাঁন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগদান করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ তার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে বরণ করে নেন।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই মূলত এই দলবদলের ঘটনা ঘটেছে। অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দিচ্ছেন। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঝিনাইদহ-৪ আসনে (কালীগঞ্জ ও ঝিনাইদহ সদরের চারটি ইউনিয়ন) ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব ওই আসনের দলের সব নেতাকর্মীকে রাশেদ খাঁনের সঙ্গে কাজ করার এবং সর্বশক্তি দিয়ে তাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।

বিএনপিতে যোগদানের আগে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন রাশেদ খাঁন। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, ‘আমার সালাম ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আপনার সাথে রাজপথের সহযোদ্ধা হিসেবে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে দীর্ঘসময় আন্দোলন সংগ্রাম ও রাজনীতি করেছি। এই পথচলায় আপনিসহ আপনার সহযোদ্ধারা কেউ আমার আচরণ ও বক্তব্যে কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি সবার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি আজ থেকে সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়ছেন। তবে যেখানেই থাকুন না কেন, তাদের সম্পর্ক মধুর ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

নির্বাচনে জয়লাভের কৌশল হিসেবেই রাশেদ খাঁন বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এবং গণমাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি জানান, দলীয় সিদ্ধান্তে রাশেদ খাঁন ধানের শীষ নিয়ে ঝিনাইদহ-৪ থেকে এবং তিনি নিজে (নুর) দলীয় প্রতীক ট্রাক নিয়ে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। নুর বলেন, ‘যেহেতু আন্দোলন বিএনপির নেতৃত্বে ও তাদের সামগ্রিক সমন্বয়ের মাধ্যমে হয়েছে, আমরা আগামী দিনেও একসঙ্গে থাকতে চাই। বর্তমান আরপিও’র বিধান অনুযায়ী জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজেদের প্রতীকের মাধ্যমে। তবে স্বাভাবিকভাবে সব এলাকায় সব মার্কা নিয়ে জয়লাভ করা সম্ভব না। তাই এ সিদ্ধান্ত।’

গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি রাশেদকে ঝিনাইদহ-৪ আসনটি ছেড়ে দিয়েছে। তবে ভোটের মাঠে সেখানে তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় গণঅধিকার পরিষদ থেকে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করলে ওই আসনে জয় পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির আশঙ্কা ছিল। এমনকি বিএনপিতে যোগ না দিলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। তাই জয় নিশ্চিত করতেই রাশেদ বিএনপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।