জেতার পর যা বললেন সাকিব- মাহমুদুল্লাহ

বাংলাদেশি সমর্থকরা বছরের বছর ধরে যে ধরনের ব্যাটিং দেখার জন্য তীর্থের কাক হয়ে বসে থাকেন, শুক্রবার কার্ডিফে কোটি কোটি দর্শককে ব্যাটিং জাদুতে বশ করে তাই দেখালেন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দ্রুত চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তারা যেভাবে অবিশ্বাস্য দৃঢ়তা নিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন, তা কেবল রূপকথায়ই সম্ভব। ম্যাচ জয়ের পর রূপকথার দুই নায়ক কথা বলেছেন সংবাদ মাধ্যমে।

ম্যাচ জিতিয়ে ফেরার পর মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘শুরুর দিকে কাজটা (ম্যাচ জেতা) কঠিন ছিলো, কারণ তাদের বোলিং খুব ভালো হচ্ছিলো। পেসাররা সুইং পাচ্ছিলো। কিন্তু ধীরে ধীরে সুইং কমে গেছে এবং আমাদের জন্য ব্যাটিংটা সহজ হয়ে গেছে।’

দ্রুত চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। ওয়ানডের ইতিহাসে যা বাংলাদেশের প্রথম দুইশ রানের জুটি। অবিশ্বাস্য এই জুটির সঙ্গী সাকিবের বিষয়ে মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘উইকেটে আমার আর সাকিবের বোঝাপড়া খুব ভালো ছিলো। সাকিব খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। এই জয়ের কৃতিত্ব তারই।’

বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম দুইশ রানের জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি করেন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ দুজনেই। ওয়ানডের এক ইনিংসে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পেয়েছেন এর আগে মাত্র একবারই। ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম।

এতো বড় কীর্তি গড়ার আগে তামিমের দ্রুত বিদায়ে যে বাংলাদেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলো সে কথাও বলেছেন মাহমুদুল্লাহ, ‘তামিম এই টুর্নামেন্টে অসাধারণ ব্যাটিং করছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে সেঞ্চুরি করেছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও প্রায় সেঞ্চুরিই করেছে। আজ দ্রুত তাকে হারানোটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিলো। আমরা চেয়েছি তার অভাবটা পূরণ করতে।’

এতো এতো কিছু করে ফেললেও সাকিব বা মাহমুদুল্লাহর মূল মনোযোগ ছিলো কেবল টিকে থাকায়। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমরা চেজিং নিয়ে চিন্তা করছিলাম না। প্ল্যান ছিলো যতোটা সম্ভব বেশি সময় ব্যাটিংয়ে থাকা। যে বলগুলো মারার মতো ছিলো, আমরা সেগুলো মারার চেষ্টা করেছি।’

আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে ম্যাচ জেতা মানে নিঃসন্দেহে বড় কিছু। এমন মন্তব্য সাকিবের। কার্ডিফের এই জয়টা নিশ্চয় বড়র চেয়েও বড়। কারণ এই জয়েই প্রথমবার আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়ে গেলো বাংলাদেশের সামনে।

এরপর সাকিব যা বলেছেন, তা প্রিন্ট করে আপনি দেয়ালে বাঁধিয়ে রাখতে পারেন নির্দ্বিধায়। সাকিব বলেন, ‘গত দুই বছর আমরা যেভাবে খেলেছি এবং এখন যেভাবে খেলছি, এখান থেকে কেবল সামনের দিকে তাকানোর কথাই ভাবা যায়। আর কিছু নয়।’