আপনি পড়ছেন

প্রায়ই হজে গমনের পর হাজীদের মৃত্যু সংবাদ শোনা যায়। হজে যেতে ইচ্ছুক বা তাদের আত্বীয়স্বজন অনেকেই জানেন না সৌদি আরবে পৌঁছে হাজির মৃত্যু হলে পরবর্তী করণীয় কী। এ সমস্ত ক্ষেত্রে হজে যাওয়ার পর কোন হাজির মৃত্যু হলে মৃতদেহ দেশে পাঠানো হবে নাকি তা পবিত্র ভূমিতেই দাফন করা হবে -এ জিজ্ঞাসা অনেকের।

hajj

এই সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি হলো, সকল হজ যাত্রী হজে যাবার আগে এই সংক্রান্ত একটি আবেদনপত্রে অঙ্গীকার করেন যে, যদি সৌদি আরবের ভূমি বা আকাশে তার মৃত্যু হয় তবে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। মৃতদেহ দেশে পাঠানো বা এই সংক্রান্ত কোন সুপারিশ তার পরিবার সৌদি সরকারকে করতে পারবেন না। আর করলেও তা সৌদি সরকারের নিকট গ্রহনযোগ্য হবে না।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এই বছর এখন পর্যন্ত প্রায় সত্তর হাজার বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদিআরব পৌঁছেছেন। তবে ইতোমধ্যেই তেইশ জন বাংলাদেশি হাজির মৃত্যুর সংবাদও পাওয়া গেছে। একুশ জন হাজীর একজন নারী ও বাকিরা সকলেই পুরুষ হাজী ছিলেন বলে জানা গেছে।

হজের সময়ে হাজীদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া মাত্রই স্থানীয় চিকিৎসালয় বা বাংলাদেশ হজ কার্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে সার্টিফাইড চিকিৎসকের সনদপত্র নিতে হয়। বাড়ি, রাস্তা, হোটেল বা হাজীদের নির্ধারিত যেকোন জায়গায় মৃত্যুবরণ করলে এই কাজটি সবার আগেই করা হয়।

তারপর মৃতদেহটি শনাক্তকরণের কাজটি করেন মৃতের আত্মীয়, পরিবার, প্রতিবেশী বা এমন কেউ যে ওই হাজীকে চেনেন। আর তা সত্যায়িত করতে মোয়াল্লেম অফিস থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হয়। এরপর বাংলাদেশ হজ কার্যালয় থেকে সনদপত্র নিতে হয়। তারপর আসে জানাজার বিষয়টি।

কোন হজযাত্রী যদি মক্কায় অবস্থানকালে ইন্তেকাল করেন তবে তার জানাজা হয় মসজিদুল হারামে। আর যদি হাজী মদিনায় ইন্তেকাল করেন সেক্ষেত্রে মসজিদে নববীতে তার জানাজার ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া জেদ্দা বা অন্য কোন স্থানে হাজীর মৃত্যু হলে সেখানকার স্থানীয় মসজিদে তার জানাজা হয়ে থাকে। মক্কায় জানাজা হলে মক্কার শারায়ে কবরস্থানে আর মদিনায় জানাজা হলে জান্নাতুল বাকি বা জেদ্দা কবরস্থানে হাজীদের দাফন করা হয়ে থাকে।

সৌদি আরবে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জানা যায় যে, হজযাত্রীদের কেউ মারা গেলে মৃতের লাশ গোসল থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব সৌদি সরকার গ্রহণ করে। এর জন্য আলাদা আলাদা বিভাগ রয়েছে।

এছাড়াও হজ করতে এসে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বাংলাদেশ মেডিকেল মিশনের ডাক্তারদের কাছ থেকে সকল ধরণের সেবা ও ওষুধ গ্রহনের সুবিধা রয়েছে। তবে কেউ চাইলেই বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারবেন না। শুধুমাত্র চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখেই ওখানে ওষুধ বিক্রয় করা হয়। আবার চিকিৎসকের কাছে সেবা নিতে গেলেও হাজীদের সৌদি আরব থাকার বৈধ কাগজ পত্র দেখিয়ে সেবা নিতে হবে। এরপর চিকিৎসক রোগীর অবস্থা অনুযায়ী যে কোন হাসপাতালে প্রেরণ করবেন।

সৌদি আরবে বাদশাহ আব্দুল আজিজ হাসপাতাল, বাদশাহ ফয়সাল হাসপাতাল, আল নুর, আজইয়াদ, বাদশাহ আব্দুল্লাহ, মদিনার আনসার হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন স্থানীয় ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এসব হাসপাতালে হাজীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও এম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা রয়েছে।

বাংলাদেশি হজ কার্যালয়ের বরাতে জানা গেছে যে, প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের ছবি, পরিচয়, তথ্য, অসুস্থ ও মৃত হাজীর নাম আপডেট করা হচ্ছে www.hajj.gov.bd এই সাইটে। যে কেউ চাইলেই এই ওয়েবসাইটে গিয়ে মৃত হাজিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে পারবেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর