কেমন হবে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ?

খেলা যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে, সেহেতু পেস আক্রমণের ধার বাড়াতে না পারলে সকরুণ ব্যর্থতা ছাড়া অন্য কিছুর জন্য অপেক্ষা করার উপায় থাকবে না। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজের নিশ্চিতভাবেই এ বিষয়ে বহু চিন্তাভাবনা চলছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টে। তা শেষ পর্যন্ত কেমন হবে পেস আক্রমণ?

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বাংলাদেশ দলে পেসার আছেন মোট পাঁচজন। এদের মধ্যে রুবেল হোসেনের এই ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভিসাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে পারেননি। ফলে মিস হয়ে গেছে প্রস্তুতি ম্যাচটিও। এ কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগে যেতে পারে তার। মূলত এ কারণেই আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে রুবেলের উপস্থিতির সম্ভাবনা খুবই কম।

বাকি চারজনের মধ্যে একাদশকে দেখা যেতে পারে তিনজনকে। তাসকিন আহমেদ এবং মোস্তাফিজের খেলা এক রকম নিশ্চিতই। সে হিসেবে শফিউল ইসলাম এবং শুভাশিস রায়ের মধ্যে সুযোগ পাবেন একজন। সেই একজন হতে পারেন শফিউল। শুভাশিসের তুলনায় কিছুটা এগিয়েই থাকছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেস আক্রমণের তুলনায় বাংলাদেশের পেস আক্রমণ বেশ দুর্বল। যদিও প্রোটিয়া দলে নেই ডেল স্টেইন ও ভেরনন ফিল্যান্ডার। কিন্তু যারা আছেন, তারাও কম নন। বিশেষ করে কাগিসো রাবাদা হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের আতঙ্কের অন্য নাম। তার সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের হয়ে নাম আসতে পারে কেবল মোস্তাফিজের।

টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ মূলত আবর্তিত হবে মোস্তাফিজকে ঘিরেই। অভিষেক টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই চার উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে বাউন্স ও লর্ট লেন্থের বল খেলা সবচেয়ে কঠিন। একই সঙ্গে মোস্তাফিজের স্লোয়ার হয়ে উঠতে পারেন মরণঘাতী অস্ত্র।

মোস্তাফিজের সেরা অস্ত্র যদি হয় স্লোয়ারের মায়াজাল, তবে তাসকিন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের প্রলয় নাচন নাচাতে পারেন তার গতিময় বাউন্সে। সঙ্গে লাইন-লেন্থের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার দেখানোও হবে বাংলাদেশি পেসারদের অবশ্য কর্তব্য।

শফিউল যদি তৃতীয় পেসার হিসেবে ঢুকে পড়েন দলে, তবে তার মূল সুবিধা হবে সুইংয়ে। যা আসলে শফিউলের সব সময়ের শক্তি। দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে যে বাতাসের প্রবাহতা দিনভর তাকে, তাও হয়ে উঠতে পারে শফিউলের সুইংকে আরো সর্পিল করে তোলার সহায়ক শক্তি।

অন্যদিকে শফিউলকে টপকে একাদশে জায়গা করে নেয়ার অন্যতম দাবিদার শুভাশিস এখনো তার বোলিংয়ের আলাদা বৈশিষ্ট তুলে ধরতে সমর্থ হননি। আপাত দৃষ্টিতে সাদামাটা এই পেসার যদি মূল একাদশে জায়গা পেয়ে যান, তবে সফলতা ধরতে পারেন লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে। বিশেষ শর্ট লেন্থের বল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কন্ডিশনে হয়ে উঠতে পারে ‘আনপ্লেয়েবল’।

কোন পেসারের কেমন অতীত

মোস্তাফিজুর রহমান টেস্ট খেলেছেন মোট ছয়টি। তাতে তার মোট শিকার ১৭টি। ক্যারিয়ারে কোনো পাঁচ উইকেট নেই।
রুবেল হোসেন খেলেছেন মোট ২৪ টেস্ট। উইকে মোটে ৩২টি। একবার নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। 
শফিউল ইসলাম টেস্ট খেলেছেন মোট ১০টি। উইকেট নিয়েছেন ১৫টি। ক্যারিয়ারে কোনো পাঁচ উইকেট নেই। 
তাসকিন আহমেদ টেস্ট খেলেছেন চারটি। উইকেট নিয়েছেন মাত্র সাতটি। পাঁচ উইকেটের কোনো কীর্তি নেই।
শুভাশিস রায় এখন পর্যন্ত মোট তিন টেস্ট। উইকেট শিকার করতে পেরেছেন পাঁচটি। বলার মতো বোলিং পারফর্ম্যান্স নেই।