দক্ষিণ আফ্রিকায় মুশফিকদের হতাশার শুরু

অনেক কিছু প্রমাণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন মুশফিকুর রহিমরা। হয়তো সে সব প্রমাণ দিবেনও তারা। কিন্তু প্রথম দিনটা মুশফিকদের জন্য এলো কেবলই হতাশা নিয়ে। এর জন্য যতোটা না দায় ভাগ্যের, তার চেয়ে বেশি দায় বোধহয় মুশফিকের ভুল সিদ্ধান্তের।

পচেফস্ট্রুমের উইকেট পড়তে ভুল করে ফেলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। টসের পর টিভিতে যখন পিচ রিপোর্ট দেখানো হচ্ছিলো, তখনই রিপোর্টকারী বলছিলেন যে, এ ধরনের উইকেট ব্যাটসম্যানদের দিকেই বাড়িয়ে রাখে সহায়তার হাত। কিন্তু মুশফিক মনে করলেন, এই উইকেট বন্ধু হবে বোলারদের। ব্যস, তালগুলিয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রথম দিনটা।

প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা তিনশ করতে পারেনি, এই ছাড়া বড় কোনো ঘটনা আর ঘটেনি পচেফস্ট্রুমে! দিন শেষে রান আউটের ফাঁদে পড়ে এক উইকেট হারিয়ে প্রোটিয়ারা তুলেছে ২৯৮ রান। আর মুশফিক ও তার দল— মাথা ঠুকে মরেছে শুধু একটা উইকেটের জন্য।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ খেলছে তিনজন পেসার নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার টপঅর্ডারে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের ছড়াছড়ি থাকলেও বাংলাদেশ দলে নেই কোনো বাঁহাতি স্পিনার। কন্ডিশনের দোহাই দিয়ে নিজেদের মূল শক্তিতে বিশ্বাস হারিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশ।

পেসারদের উপর এতো ভরসা নিয়ে খেলতে নামলেও প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি হাত ঘুরিয়েছেন একজন স্পিনার— মেহেদি হাসান। ৯০ ওভারের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের বেশি ওভার করেছেন তিনিই। হাত ঘুরাতে হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল হক ও সাব্বির রহমানকেও। কিন্তু উইকেট নিতে পারেননি কেউই।

পচেফস্ট্রুমে ব্যাটিংটা যে কতোটা সহজ, তার নির্মল প্রদর্শনী দেখিয়েছেন দুই ওপেনার ডিন এলগার ও অভিষিক্ত অ্যাইডেন মার্করাম। এলগার সেঞ্চুরি করলেও মার্করাম আউট হয়েছেন ৯৭ রানে। অভিষেকে নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হওয়া ৩০তম ব্যাটসম্যান তিনি। তার আগে অভিষেকে ৯০এর ঘরে ঢুকেও সেঞ্চুরি মিস করাদের মাত্র দুজন কাটা পড়েছিলেন রান আউটের ফাঁদে পড়ে। তারা হলেন পাকিস্তানের আব্দুল কাদির ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ।

আউট হওয়ার আগে এলগারের সঙ্গে ১৯৬ রানের জুটি গড়ে গেছেন মার্করাম। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা তৃতীয় বৃহত্তম ওপেনিং জুটির রেকর্ড। প্রায় দুইশ রানের জুটি ভাঙার পরের জুটিতেই ১০২ রান যোগ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই পচেফস্ট্রুম যে ব্যাটিং স্বর্গ— দিন ভর বল কুড়াতে কুড়াতে মনে হয় এই তিক্ত সত্যটাই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন মুশফিকরা।