আপনি পড়ছেন

আজ হিজরী ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা। প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ বছর আগে ৬১ হিজরি সনের আজকের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার পরিবারের সদস্যরা এজিদের সৈন্যদের হাতে ফোরাত নদীর তীরে, কারবালার প্রান্তরে শহীদ হন। ঈমানের বলে বলীয়ান এবং সত্য ও ন্যায়ের প্রতি দৃঢ় অবস্থান নিয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন ইমাম হোসাইন।

Holy Ashura syambolic pic

সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আপোষহীন মনোভাব নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে যেয়ে শাহাদতের অমীয় সুধা পান করে পৃথিবীর বুকে চির অমর হয়ে আছেন ইমাম হোসাইন (রা:)। এ কারণে মুসলিম উম্মাহর কাছে শোকাবহ ঘটনাবহুল এ দিনটি ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি সত্যের জন্য আপসহীন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা বিশ্ব মুসলিম মননকে যুগে যুগে প্রেরণা জুগিয়ে আসছে।

শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাঁদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ দিবস হিসেবে বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।

আরো যা ঘটেছিল: ১০ মহররম আশুরার দিন মহান আল্লাহতায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ দিনেই (শুক্রবার) মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে পৃথিবী ধ্বংস হবে।। এর বাইরে এ দিনেই হজরত আদম (আ:)-কে জান্নাত থেকে পৃথিবীর বুকে অবতরণ করানো হয়। এ দিনেই আল্লাহ তায়ালা তার তওবা কবুল করেছিলেন। হজরত নূহ (আ:) এ দিনেই মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পেয়ে নৌকা থেকে পৃথিবীর বুকে আবার অবতরণ করেছিলেন। এ দিনে হজরত ইদ্রিস (আ:) সশরীরে জান্নাতে প্রবেশ করেন। হজরত আইয়ুব (আ:) দীর্ঘ দিন কঠিন রোগ ভোগার পর এ দিনে রোগমুক্ত হন।

এদিন হযরত ইব্রাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে রক্ষা পেয়েছেন, হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। এদিনে হজরত দাউদ (আ:)-এর তওবা কবুল হয় এবং হজরত সোলায়মান (আ:) বাদশাহী লাভ করেন। ১০ মুহাররমে হজরত ইউসুফ (আ:) তার পিতা হজরত ইয়াকুব (আ:)-এর সাথে মিলিত হন। আশুরার দিনেই হজরত মুসা (আ:) আল্লাহ তায়ালার সাথে কথা বলেছিলেন। এ দিনেই আল্লাহ তায়ালা বনি ইসরাইল সম্প্রদায়কে ফেরাউনের বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করেন এবং লোহিত সাগরে ফেরাউন ও তার বাহিনীর সলিল সমাধি ঘটান। পবিত্র আশুরার দিনেই আল্লাহ তায়ালা হজরত ঈসা (আ:)-কে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করে সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিশেষ আয়োজন ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায় পুরান ঢাকার হুসেনি দালান ইমাম বারা থেকে সকাল ১০টায় তাজিয়া মিছিল বের করবে। দিবসটি উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে গৃহীত ১০ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষ দিন আজ। এবারের তাজিয়া মিছিলে ছুরি, তলোয়ার বা আগুন খেলা নিষিদ্ধ করেছে ডিএমপি।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও বিরোধী দলের নেত্রী দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর